Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Somen Mitra

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে এ বার কে?

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে থাকতে থাকতে প্রয়াত হয়েছেন কেউ, এমন ঘটনা মনে করতে পারছেন না  কংগ্রেস নেতারা।

সোমেন মিত্রের স্থানে এ বার কে?—ফাইল চিত্র।

সোমেন মিত্রের স্থানে এ বার কে?—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৪:২১
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে আচমকাই অধীর চৌধুরীকে সরিয়ে বাংলায় কংগ্রেসের দায়িত্ব সোমেন মিত্রকে দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। জটিল অসুস্থতা কাটিয়ে ফিরে আসা সোমেনবাবুকে ফের প্রদেশ সভাপতি করা নিয়ে তখনই চর্চা হয়েছিল বিস্তর। সেই সোমেনবাবুর যখন আকস্মিক প্রয়াণ ঘটল, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন বেশি দূরে নয়। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের পথ নিয়েই চিন্তায় পড়েছে কংগ্রেস শিবির।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে থাকতে থাকতে সোমেনবাবুর মতো প্রয়াত হয়েছেন কেউ, এমন ঘটনা মনেই করতে পারছেন না কংগ্রেস নেতারা। এখন প্রশ্ন, এর পরে কে? কংগ্রেসের সামনে প্রথম ভাবনা দৃষ্টিভঙ্গির। পুরনোদের মধ্যেই কাউকে বেছে নেওয়া হবে? নাকি পরবর্তী প্রজন্মের কাউকে প্রদ‌েশ সভাপতি পদে এনে সামনে তাকানোর চেষ্টা হবে? তার পরের প্রশ্ন, পুরনো নেতা হোন বা তুলনায় তরুণ— প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে সেই নাম কী হতে পারে? আবার এখনই কাউকে পূর্ণ দায়িত্ব না দিয়ে আপাতত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করার পথেও যেতে পারে এআইসিসি।

কংগ্রেস শিবিরে চর্চা অনুযায়ী, বাংলায় এখনকার নেতাদের মধ্যে সব চেয়ে এগিয়ে অধীরবাবুই। কংগ্রেসের কঠিন সময়েও নিজের জোরে বহরমপুর লোকসভা আসন জিতেছেন। যদিও তাঁর কাঁধে এখন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব আছে। কিন্তু বাংলায় তাঁর চেনা সংগঠন আবার অধীরবাবুর হাতে তুলে দেওয়া একেবারে অসম্ভব নয়। প্রবীণদের মধ্যে আছেন আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য, দেবপ্রসাদ রায়েরা। মান্নান এখন বিধানসভার বিরোধী দলনেতার পদে আছেন। প্রদীপবাবুর ক্ষেত্রে সে রকম কোনও সমস্যা নেই। কেউ কেউ আবার দেবপ্রসাদবাবুর কথাও বলছেন। শারীরিক ভাবে কিছু অসুবিধা থাকলেও তাঁর অভিজ্ঞতা উড়িয়ে দেওয়ার নয় বলেই একাংশের মত।

আরও পড়ুন: শ্রীসোমেন্দ্রনাথ মিত্র (১৯৪১-২০২০)

পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সামনের সারির মুখ আপাতত অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকারেরা। সোমেনবাবুর সভাপতিত্বের শেষ দিকে হাতে-কলমে অনেক কাজই সামলে দিতেন অমিতাভবাবু। আবার বলিয়ে-কইয়ে মুখ হিসেবে শুভঙ্করেরও পরিচিতি আছে। প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি থাকলেও দীপা দাশমুন্সি, আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীরা কেউ প্রদেশ সভাপতি পদের জন্য দৌড়ে থাকবেন কি না, তা নিয়ে অবশ্য দলে কেউই নিশ্চিত নন।

আরও পড়ুন: প্রিয়দা নেই, সোমেনও অতীত, যুগ ফুরোচ্ছে, লিখলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়

পুরনো নেতা হিসেবে রাজ্যের সর্বত্র সোমেনবাবুর কিছু সাংগঠনিক প্রভাব ছিল। সে কংগ্রেস এ রাজ্যে যত ক্ষয়িষ্ণুই হয়ে আসুক না কেন। আবার বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে চলার ক্ষেত্রেও সদ্যপ্র্য়াত সভাপতির দক্ষতা ছিল। বামফ্রন্টে শরিকদের নিয়ে সমস্যাও সোমেনবাবুর হস্তক্ষেপে সহজ হয়ে গিয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত আছে। দু’পক্ষের নেতাদের একে অপরের দফতরে অনুষ্ঠানে যাওয়ার সূচনাও সোমেনবাবুর আমলে। যে কারণে বিমান বসু-সহ বাম নেতারা বিরোধী ঐক্যের ক্ষেত্রে প্রয়াত নেতার ভূমিকার কথা বলছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘এখন যাঁরা কংগ্রেস করেন, তাঁদের অনেকের কাছেই সোমেনদা ছিলেন রাজনৈতিক গুরু। আবার বাম শিবিরেও তাঁর অনায়াস যাতায়াত ছ্লি, যেটা যৌথ কর্মসূচি নেওয়ায় সহায়ক হচ্ছিল। দু’দিক দিয়েই আমাদের ক্ষতি হল।’’ তা ছাড়া, প্রদেশ কংগ্রেস চালাতে যে তহবিলের জোগান লাগে, সেখানেও সোমেনবাবুর আলাদা ‘কার্যকারিতা’ ছিল। বছরদুয়েক আগে যখন দায়িত্ব নেন, প্রদেশ কংগ্রেসের ভাঁড়ে মা ভবানী দশা! আর এখন বিধান ভবনের উপরে সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

প্রদেশ সভাপতি পদে ফেরত এসে সোমেনবাবু বলেছিলেন, ‘‘কাঁটার আসন পেয়েছি!’’ ভাঙা সংগঠন নিয়ে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধেই আগামী বিধানসভা ভোটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস। দলের অন্দরে আলোচনা, এই পরিস্থিতিতে নতুন দায়িত্বে যিনিই আসুন, কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য!

অন্য বিষয়গুলি:

Somen Mitra PCC AICC Adhir Chowdhury Deepa Dasmunshi Abu Hasem Khan Choudhury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy