Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
DA Strike

ডিএ-র দাবিতে ধর্মঘটে কেমন সাড়া দিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা? দিনের শেষে কার কী দাবি?

ডিএ আন্দোলনের ‘সাফল্য’ নিয়ে দিনের শেষে এক দল দাবি করলেন, ধর্মঘটে কর্মচারীদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া মিলেছে। অন্য দল জানালেন, রাজ্যের অফিস কাছারি অন্য দিনের মতোই সচল থেকেছে।

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৩ ১৮:৩৪
Share: Save:

দিনের শেষেও রয়ে গেল ধোঁয়াশা। শুক্রবার সকালেই ডিএ নিয়ে ধর্মঘটে শামিল হওয়া রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠগুলি দাবি করেছিল, গোটা রাজ্য প্রশাসন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। পাল্টা তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠন জানিয়েছিল, ধর্মঘটের বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি। দিনের শেষে দুই তরফেই বজায় রইল সেই সুর।

এক দল দাবি করলেন, ধর্মঘটে কর্মচারীদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া মিলেছে। অন্য দল জানালেন, রাজ্যের অফিস কাছারি অন্য দিনের মতোই সচল থেকেছে। শুক্রবার সকালেই জানা গিয়েছিল নবান্ন, বিকাশ ভবনে কর্মীদের হাজিরা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছিল নব মহাকরণ, খাদ্য ভবন, ক্রেতাসুরক্ষা ভবন, কৃষি বিপণন ভবনে। অধিবেশন চলায় স্বাভাবিক হাজিরা ছিল বিধানসভাতেও। মহাকরণে যে ক’টি দফতর খুলেছিল, সেখানে কর্মীদের হাজিরার সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় খানিকটা কম বলে জানা যায়। বেলা গড়নোর পর এই চিত্র বিশেষ বদলায়নি। তবে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে।

বাঁকুড়া জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে ধর্মঘটীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে পুলিশের। জেলার কৃষি দফতরে ধর্মঘটীদের উপর বহিরাগতরা হামলা চালিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। জেলাশাসকের দফতরে অবস্থানরত সরকারি কর্মীরা কাজে যোগদান করা অন্য কর্মীদের দফতরে যেতে বাধা দেন বলেও অভিযোগ। পুরুলিয়া জেলায় ধর্মঘট ১০০ শতাংশ সফল বলে দাবি করেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক কৃপাসিন্ধু গরাই। ডিএ-র দাবিতে ধর্মঘটে মিশ্র সাড়া মিলেছে মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায়। ধর্মঘট রুখতে কড়া পদক্ষেপ করে জেলা প্রশাসনও। বেলা ১০টা থেকে জেলাশাসকের কার্যালয়, অন্যান্য প্রশাসনিক ভবন, স্কুল বোর্ড ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সামনে পিকেটিং শুরু করেন ধর্মঘটের সমর্থনে থাকা সরকারি কর্মীরা। তবে অফিসে ঢুকতে তাঁরা কাউকে বাধা দেননি। সব থেকে বেশি সাড়া পড়ে আদালত কর্মচারীদের মধ্যে। হাওড়ার বিভিন্ন স্কুলে কাজে যোগ দেননি বহু শিক্ষক। এই পরিস্থিতিতে গ্রামীণ হাওড়ার একটি স্কুলে ক্লাস নেয় উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। তবে এ দিন স্কুলগুলিতেও ছাত্রদের উপস্থিতির হার অন্যদিনের তুলনায় অনেক কম ছিল। কলকাতা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানা গিয়েছে, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকা স্কুলগুলিতে উপস্থিতির হার ছিল ৮০ শতাংশ।

ডিএ নিয়ে ধর্মঘটে শামিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা তাপস চক্রবর্তী বলেন, “ধর্মঘটের সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে।” খাদ্যভবন, নব মহাকরণে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। কর্মচারীদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটিও শুক্রবারের ধর্মঘটে শামিল হয়েছে। সংগঠনের অন্যতম নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী ধর্মঘটের প্রভাব প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রত্যাশামতোই কর্মচারীবন্ধুরা রাজ্য প্রশাসনকে অচল করে দিয়েছেন। শুধু কলকাতা নয়, সারা রাজ্যেই এই ধর্মঘট সফল।” তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তী অবশ্য এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ধর্মঘটের বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি রাজ্যে। নবান্নে অন্য দিনের তুলনায় হাজিরা বেশি। রাজ্যের প্রধান সচিবালয়কেই তো অচল করতে পারলেন না ধর্মঘটীরা।” এর পাশাপাশি তাঁর দাবি, বিকাশ ভবন, জলসম্পদ ভবনের মতো বিধাননগরে অবস্থিত সমস্ত সরকারি কার্যালয়ে উপস্থিতির হার অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে। ডিএ-ধর্মঘট নিয়‌ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, রাজ্যের ৩ থেকে ৪ লক্ষ কর্মচারী শুক্রবার নিজেদের কর্মক্ষেত্রে গরহাজির ছিলেন। ডিএ আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, এমন আন্দোলন জারি রাখতে হবে সরকারি কর্মীদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy