Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Sandip Ghosh

টাকা নয়ছয় থেকে প্রতারণা, সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর কী কী অভিযোগ রয়েছে?

আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট সিট গঠন করে রাজ্য সরকার। সেই সিটের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়।

সন্দীপ ঘোষ।

সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৪২
Share: Save:

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডার দুর্নীতি থেকে সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও রয়েছে তার মধ্যে। অভিযোগ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে বেশির ভাগ ‘অনিয়ম’ই হয়েছে সন্দীপ অধ্যক্ষ থাকাকালীন।

গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় এক চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ। ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। এই আবহে আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও উঠতে শুরু করে। তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে তাঁর ইস্তফার দাবি তোলেন সেখানকার জুনিয়র ডাক্তারেরা। আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট সিট গঠন করে রাজ্য সরকার। সেই সিটের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়। এই আবহে মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে আরও একটি মামলা করেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। এফআইআর করা হয় সন্দীপের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, দুর্নীতির মামলা করে সিবিআই। এফআইআরের সঙ্গে হাই কোর্টের নির্দেশের কপিও জুড়ে দেয় সিবিআই।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

সেই নির্দেশপত্রে আখতারের অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টে যে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন আখতার, সেখানে মোট ১৫টি অনিয়মের উল্লেখ করেন তিনি। মূল অভিযুক্ত হিসাবে সন্দীপ ছাড়াও নাম নেন ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের কর্তা দেবাশিস সোম এবং সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠের। আখতারের করা সেই ১৫টি অভিযোগ এখন খতিয়ে দেখছে সিবিআই।

সেগুলি কী কী?

সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ, সরকারের সম্পত্তি স্বাস্থ্য ভবন এবং কলেজ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনকে দেওয়া হয়েছে। ফুড স্টল, ক্যাফে, ক্যান্টিনের মতো জায়গা টেন্ডার না ডেকেই বণ্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সরবরাহকারীদের কাজের বরাত দেওয়ার বিষয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, কোটি কোটি টাকার কাজের বরাত গুটিকয়েক নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। তাঁদের বরাত পাওয়ার যোগ্যতা নেই বলেও অভিযোগ। আর্থিক ব্যবস্থার নিয়মকানুন ইচ্ছাকৃত ভাবে অমান্য করা হয়েছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। অভিযোগ উঠেছে, পছন্দের লোকজনের জন্য সুযোগসুবিধা চেয়ে নেওয়া হয়েছিল। আধিকারিকদের কথায় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং বৈদ্যুতিক বিভিন্ন কাজ রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরকে দিয়ে না করানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই কাজের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছিল বাইরের সংস্থাকে। হাসপাতালের মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা সংক্রান্ত কাজের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, হাসপাতালের জৈব বর্জ্য বেআইনি ভাবে বাইরে বিক্রি করা হয়েছে। হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ, পুরসভার চোখ এড়িয়ে বেনামি ব্যবসা চালানো, কোভিডের সময় সরকারের তরফে হাসপাতালের জন্য যে তহবিল তৈরি করা হয়েছিল, সন্দীপের বিরুদ্ধে তা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছেন আখতার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE