রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আসন্ন পুর নির্বাচনের বিষয়ে বিশদ তথ্য চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র।
ভোটের মরসুমে তিনি দর্শকের আসনে থাকছেন না, সক্রিয় ভূমিকা নিতে চলেছেন পুর নির্বাচনে। প্রায় এই বার্তাই দিয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আসন্ন পুর নির্বাচনের বিষয়ে বিশদ তথ্য চাইলেন রাজ্যপাল। তথ্য যে চেয়েছেন, সে কথা টুইট করে নিজেই জানালেন সোমবার সকালে। আর বিকেলে রাজভবনের তরফে ফের জানানো হল, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের বিষয়ে তাঁকে অবহিত করবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস।
কলকাতা-সহ শতাধিক পুরসভায় নির্বাচন হতে চলেছে রাজ্যে। এক দিনে নয়, বরং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে এই নির্বাচন হোক, রাজ্য সরকার এমনটাই চায় বলে শোনা যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের মতামত জানার পরেই কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে এবং নির্বাচন ঘোষণা করবে। মতামত বা আপত্তি জানানোর সুযোগ বিরোধী দলগুলোরও রয়েছে। তবে রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনের ভরসাতেই যে হেতু ভোট করাতে হবে, সে হেতু রাজ্য সরকারের মতামত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কমিশনের কাছে।
কিন্তু সেই চেনা পরিস্থিতি এ বার কিছুটা অন্য রকম হতে পারে, ইঙ্গিত দিচ্ছে রাজভবন। আসন্ন পুর নির্বাচনের বিষয়ে রাজ্য সরকারের ইচ্ছা এবং মতামতই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে, এমনটা যেন না হয়— এই বার্তা দেওয়া শুরু করে দিল রাজভবন। পুর নির্বাচনের বিষয়ে বিশদ তথ্য চেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে রাজভবনেও ডাকা হল।
Will seek an update as regards upcoming Municipal Elections from the State Election Commissioner Saurabh Kumar Das on Feb 27. The Commission is a constitutional body for superintendence, direction and control of Municipal Elections under article 243K of the Constitution of India.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) February 24, 2020
এ দিন সকাল ১১টা ২০ নাগাদ টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় জানান যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে তিনি পুর নির্বাচনের বিষয়ে বিশদ তথ্য চেয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপালকে সে তথ্য দেবেন, এমনটাও রাজ্যপাল লেখেন নিজের টুইটে।
আরও পড়ুন: নানা পতাকার রং দেখছে কলকাতা, তাই আবির নিয়ে পথে নামছি: নচিকেতা
সন্ধ্যায় একই বিষয়ে রাজভবন বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে লেখা হয় যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে পুরভোট সংক্রান্ত বিষয়ে অবহিত করবেন।
পুরভোট বা পঞ্চায়েত ভোটের মতো যে সব নির্বাচন রাজ্যের নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করে, সেই নির্বাচনের বিষয়ে জানতে কমিশনারকে রাজভবনে তলব করছেন রাজ্যপাল— এমন ছবি কিন্তু বিরল। রাজনৈতিক শিবির বলছে, রাজ্যপাল স্পষ্ট করে দিচ্ছেন যে, পুরভোটে তিনি দর্শকের ভূমিকায় থাকবেন না। বরং বেনজির ভাবে হলেও, যেখানে প্রয়োজন মনে করবেন, সেখানেই হস্তক্ষেপের চেষ্টা করবেন।
আরও পড়ুন: ভোট-তৎপরতায় ‘ঘাটতি’ কি কমিশনেই?
রাজভবনের এ দিনের বিবৃতিতেও কিন্তু সে ইঙ্গিত রয়েছে। বিবৃতির দ্বিতীয় স্তবকে লেখা হয়েছে— নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক এবং সব প্রার্থী ও সব রাজনৈতিক দলকে সমান ভাবে লড়ার সুযোগ দেওয়া হোক, এর উপরেই জোর দিচ্ছেন রাজ্যপাল। হিংসা ছেড়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করুক জনতা— রাজ্যপাল এই আহ্বান জানিয়েছেন বলেও বিবৃতিতে লেখা হয়েছে।
পুর বা পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন— এই রকম অভিযোগ বাংলায় বার বার উঠেছে। কিন্তু সেই বিষয় নিয়ে রাজ্যপাল আগাম সতর্কবার্তা জারি করছেন, এমন পরিস্থিতি কিন্তু বেশ বিরল।
পুরভোটের দিন ক্ষণ এখনও ঘোষিত হয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও এখনও হয়নি সে বিষয়ে। আগামী কয়েক মাসেই গোটা রাজ্যে পুরভোট সেরে ফেলা হতে পারে বলে নবান্ন এবং কমিশন সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছে মাত্র। সেই আভাসেই যে ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে রাজভবন, তাতে ভোট ঘোষণার পরে এই সক্রিয়তা কোথায় পৌঁছবে, তা নিয়েও নানা জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। কয়েক দিন আগে উত্তরবঙ্গে একটি কর্মসূচিতে গিয়েও রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, ভোটে হিংসার আশ্রয় নিলে গুরুতর ফল ভোগার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এ বার তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে বিশদ তথ্য চাইলেন আসন্ন ভোটের বিষয়ে। নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হওয়া চাই— সে কথাও ‘জোর দিয়ে’ মনে করিয়ে দিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy