ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত দক্ষিণবঙ্গে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তথ্য দিল রাজ্য সরকার। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝাতে প্রমাণের উপরেই বেশি নির্ভর করছে তারা।
ইয়াসের ধাক্কায় বাংলার ক্ষত ও ক্ষতি দেখতে আসা কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। নবান্ন সূত্রের খবর, দিন সাতেকের মধ্যে দিল্লিতে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানোর কথা রাজ্যের। সেই রিপোর্টের সঙ্গে কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা নিজেদের পর্যবেক্ষণও রিপোর্টের আকারে কেন্দ্রের কাছে জমা দেবেন। কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের জেলা সফরে প্রতিটি জেলা প্রশাসন কার্যত একই সুরে কথা বলেছে তাঁদের সঙ্গে। তথ্য-বোঝাই কাগজপত্রের চেয়ে অধিক পরিমাণে ভিডিয়ো আর ছবি সহযোগে পরিস্থিতির গভীরতা বোঝানো হয়েছে কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদের।
দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ঝঞ্ঝাকবলিত এলাকাগুলিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। কোনও কোনও জেলা তাঁদের জন্য ‘পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজ়েন্টেশন’ তৈরি করেছিল, আবার কোনও জেলার অবলম্বন ছিল ভিডিয়ো এবং ছবির কোলাজ। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় দল যে-সব এলাকায় গিয়েছিল, সেই সব জায়গারই দুর্যোগ-পূর্ব এবং দুর্যোগ-পরবর্তী ছবি দেখিয়ে তুলনামূলক বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
কেন এই ব্যবস্থা?
প্রশাসনের অন্দরের যুক্তি, ইয়াস আছড়ে পড়ার প্রায় ১০ দিন পরে কেন্দ্রীয় দল পরিস্থিতি দেখতে রাজ্যে এসেছে। তার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির মধ্যে যেখানে সম্ভব ছিল, সেখানে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়। ফলে সেই সব জায়গায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত ছবিটা কেন্দ্রীয় অফিসারদের পক্ষে বোঝা মুশকিল হতে পারে। তার উপরে তথ্য দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি বোঝাতে গেলে বরং তার বাস্তবতা নিয়ে সেই অফিসারদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারত বলে মনে করা হচ্ছে। সেই জন্যই দুর্যোগের আগেকার এবং পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনামূলক ছবি তুলে ধরা হয়েছে। এক জেলা-কর্তা বলেন, “ছবি আর ভিডিয়োর মাধ্যমে প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরার নির্দেশ ছিল। সামগ্রিক তথ্য তো কেন্দ্রীয় সরকার বা কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা পাবেনই। তার সঙ্গে তথ্যপ্রমাণও তাঁদের হাতে থাকা জরুরি।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আমপান থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার তথ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় দলকে ভারাক্রান্ত করার পথে হাঁটেনি রাজ্য সরকার। আমপানের পরে রাজ্য প্রথমে কেন্দ্রের কাছে এক লক্ষ দু’হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল। পরে ক্ষয়ক্ষতি বাবদ ৩৫ হাজার কোটি টাকা সাহায্য চায় রাজ্য। তার পরেও
কেন্দ্রের থেকে বিশেষ অর্থসাহায্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। আমপানের সময়ের ‘ভুল’ আর যে বরদাস্ত হবে না, এ বার সেই ইঙ্গিতই দিয়েছিল রাজ্য।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে ইয়াস-ধাক্কা সামলানোটাও রাজ্য সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। এ বারের দুর্যোগে প্রাণহানি ঠেকানো গেলেও সম্পত্তি, পরিকাঠামো এবং কৃষিক্ষেত্রের প্রভূত ক্ষয়ক্ষতির বোঝা চেপেছে সরকারের উপরে। যদিও ইয়াসের পরে আলাদা ভাবে অর্থের দাবি তোলা হয়নি। বস্তুত, কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তিনি ক্ষতিপূরণের বিষয়টি কেন্দ্রের বিবেচনার উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy