শালবনির মৌপালে দেওয়াল লিখন। ছবি: কিংশুক আইচ।
কুড়মিদের ‘ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি’ জানিয়েছে, তৃণমূলকে একটি ভোটও নয়। পাল্টা রণকৌশল হিসাবে পঞ্চায়েত ভোটে কী করবে শাসক দল, তা নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। সেখানে মূল প্রশ্ন, তফসিলি ও জনজাতি সংরক্ষিত বাদে বাকি আসনে দল কি সমহারে কুড়মি প্রার্থী দেবে, নাকি এলাকা-ভিত্তিক সমীক্ষা করেই প্রার্থী বাছবে? বিষয়টি এখন আলোচনাস্তরে।
কুড়মি আন্দোলন এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে থাকা মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার পরে ধরপাকড়ে জঙ্গলমহল জুড়ে চাপা কুড়মি অসন্তোষ দানা বাঁধছে। এই আবহে ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা, কুড়মি প্রতিনিধিরা নির্দল হিসাবে লড়বেন। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিতপ্রসাদ মাহাতো জানিয়েছেন, কুড়মিদের দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক দলকেই লেখাজোকা করতে দেওয়া হবে না। ফলে, কুড়মি গ্রামগুলিতে কী ভাবে তৃণমূলের প্রচার হবে, স্পষ্ট নয়। জঙ্গলমহলে শাসক দলের পোড় খাওয়া পুরনো নেতাদের মতে, এই অবস্থায় সংরক্ষিত আসনগুলির বাইরেও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কুড়মি ও জনজাতি প্রার্থীদের সমহারে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বিধানসভা ভোটে অসংরক্ষিত কেন্দ্র ঝাড়গ্রামে জনজাতির প্রার্থী বিরবাহা হাঁসদার বড় জয়ের কথা বলছেন।
তৃণমূলের জেলা নেতারা এখন বিধানসভাভিত্তিক বৈঠক করে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করছেন। এর আগে অভিষেকের অধিবেশনে ভোটাভুটিতে ত্রিস্তর প্রার্থীদের নাম উঠে এসেছে। এ ছাড়াও ‘এক ডাকে অভিষেক’ কর্মসূচিতে ফোনে পছন্দের প্রার্থীর নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। আইপ্যাকের সদস্যেরাও রিপোর্ট দিয়েছেন। সব খতিয়ে দেখেই তালিকা চূড়ান্ত করবেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে কয়েক জন মনোনয়ন দাখিল করায় প্রবল অস্বস্তিতে শাসক দল। তার মধ্যেই সব দিক সামলানোর চেষ্টা চলছে।
ঝাড়গ্রামে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ওবিসি সংরক্ষণ নেই। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতে রয়েছে। সেই আসনগুলিতে কুড়মি প্রার্থী থাকবেন। তবে এলাকাভিত্তিক কুড়মি ও জনজাতি ভোটারের সংখ্যার তুল্যমূল্য বিচার করে প্রার্থী দেওয়া নিয়েও সাবধানী তৃণমূল। দলের এক পক্ষ বেশি করে কুড়মি প্রার্থী চাইলেও অন্য পক্ষ মনে করছেন, সেটাকে দুর্বলতা হিসাবে প্রচার করা হতে পারে। তাতে জনজাতিরাও বিপক্ষে যেতে পারেন। কয়েক দিন আগেই কুড়মিদের তফসিলি জনজাতি তালিকাভুক্তির বিরোধিতা করে ২৪টি জনজাতি সংগঠনের ডাকা বন্ধে সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছিল ঝাড়গ্রামে। তাই ‘শ্যাম আর কুল’ দুই-ই বজায় রেখে প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে রীতিমতো ঘাম ঝরাচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের প্রস্তাবই যে গ্রাহ্য হবে, এমন কোনও কারণ নেই। নানা ভাবে প্রার্থীদের নাম শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে গিয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদনক্রমে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy