হঠাৎ আলোর ঝলকানি। বৃহস্পতিবার শ্যামনগরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
তীব্র দহন আর নাছোড় আর্দ্রতায় বৃহস্পতিবার দিনভর নাকাল হয়েছে কলকাতা। তাতে স্বস্তির প্রলেপ দিল রাতের জোড়া কালবৈশাখী।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, রাতে পরপর হানা দেয় দু’টি ঝড়। প্রথম ঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৭ কিলোমিটার। পরেরটির ৮০ কিলোমিটার। আলিপুরে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। তার স্থায়িত্ব ছিল এক মিনিট। এক পশলা জোরালো বৃষ্টিও হয়েছে। বেশি রাত পর্যন্ত প্রাণহানি বা বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।
দিন দশেক আগে, ১৭ এপ্রিল এমনই জো়ড়া ঝড় আছড়ে পড়েছিল কলকাতায়। সে-দিনও দ্বিতীয় দফার ঝড়টিই ছিল মারাত্মক। তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৮ কিলোমিটার। অসংখ্য গাছ উপড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল মহানগর এবং লাগোয়া জেলাগুলি। কলকাতাতেই মৃত্যু হয় ছ’জনের। এ দিনের জোড়া ঝড়ে অবশ্য বড় মাপের গাছ ভেঙে পড়া বা হতাহতের খবর মেলেনি। তবে আলিপুরেই ভেঙে পড়ে একটি গাছ। এ দিনের ঝড়বৃষ্টিতে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। সাতটি উড়ান কলকাতায় নামতে পেরে ভুবনেশ্বর ও গুয়াহাটি চলে যেতে বাধ্য হয়। হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ভুগতে হয় ঘরমুখী যাত্রীদের। তার ছিঁড়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় ক্যানিং-সহ বেশ কিছু জায়গায়।
এ বারের গ্রীষ্মে দহনের দাপট বাড়বে বলে পূর্বাভাস দীর্ঘদিনের। সেই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে জোড়া ঝড়ের প্রবণতা। রেডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিকেলে ঝাড়খণ্ড ও পুরুলিয়ার উপরে একটি বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ দানা বেঁধেছিল। বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাও়়ড়ার উপর দিয়ে বয়ে এসে সেই ঝ়়ড় রাতে হাজির হয় কলকাতায়। প্রবল ঝড়বৃষ্টি ঘটিয়ে তা বাংলাদেশের দিকে চলে গিয়েছে। উৎসস্থল, ঝড়ের গতিবেগ খতিয়ে দেখে এ দিনের ঝড়কে কালবৈশাখী তকমা দিয়েছে হাওয়া অফিস। ‘‘১৭ এপ্রিলের ঝড়ের গতিবেগ বেশি হলেও তা কালবৈশাখী ছিল না,’’ বলছেন এক আবহবিজ্ঞানী।
বিমানবন্দরের খবর, মেঘ দেখেই সতর্ক করে দেয় এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল। ঝড়ের সময় বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। ঝ়ড় থামলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy