সদলবলে হইহই করে আসছিল মিছিলটা। সামনে উড়ছে বিজেপি-র পতাকা। লম্বা সেই মিছিলের পিছনেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কংগ্রেস আর বামেদের চেনা পতাকাও দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল।
হরিহরপাড়া ব্লক অফিসের সামনে প্রায় দুয়ার আগলে দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল কর্মীদের ‘ভ্রান্তি’র সূত্রপাত সেখানেই। লাঠি-বাঁশ-লোহার রড হাতে দাঁড়িয়ে থাকা দলের কর্মীদের কেউ এক জন ধুয়ো তোলে ‘বিরোধীরা এক সঙ্গে আসছে রে!’ আর সময় নেয়নি, তাদের ঠেকাতে কিছুটা মরিয়া হয়েই এ বার সেই মিছিলের উপরেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শাসক দলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা।
ততক্ষণে কংগ্রেসের মিছিলও এসে পড়েছে কাছাকাছি। এ বার মারমুখী তৃণমূল কর্মীদের ঠেকাতে একই পন্থা নেয় কংগ্রেসের সমর্থকেরাও। ফলে রণক্ষেত্র্রে চেহারা নেয় হরিহরপাড়া।
ইট-পাথরের পাশাপাশি, মুহুর্মুহু বোমা পড়তে থাকে। চলতে থাকে, বাঁশ-লাঠির যুদ্ধও। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই সময়ে তাদের জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল নোমান ‘রক্তাক্ত’ হয়েছেন খবর ছড়াতেই দু’পক্ষের লড়াই ছড়িয়ে পড়ে হরিহরপাড়ার মাঠ-ঘাট-গলিতেও।
তৃণমূলের অভিযোগ, এই সময়ে হরিহরপাড়া কংগ্রেসে পার্টি অফিসের সামনে আচমকাই গুলি ছুডতে থাকে কংগ্রেসের লোকজন। হরিহরপাড়া থানার ওসি কার্তিক মাজি বলেন, ‘‘ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সকলেই কংগ্রেসের লোক। বরং কংগ্রেসের কার্য়ালয় থেকে সাতটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। আর, পুলিশের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
প্রতিবাদে বহরমপুরে এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। তিনি বলেন, ‘‘মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে মার খেলাম আমরা। মাথা ফাটল আমাদের। আর আমরাই কিনা পিস্তন উঁচিয়ে গুন্ডামি করেছি!’’
যা দেখে জেলা সিপিএমের এক নেতা বলছেন, ‘‘দু’বছরে ছবিটা কেমন বদলে গেল, একদা কংগ্রেসের গড়ে এখন তৃণমূল শুধু দাপাচ্ছে না, হরিহরপাড়ায় গন্ডগোল হল আর কংগ্রেসকে বহরমপুরে পালিয়ে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে হচ্ছে!’’
জেলা বিজেপির অভিযোগ, এ দিন বেলা ১১ টা নাগাদ হরিহরপাড়ায় বিজেপির দলীয় দফতরে ঢুকেও পাঁচ জনকে বেধড়ক মারধর করে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। পুলিশের কাছে সে ব্যাপারে অভিযোগও জানিয়েছে তারা।
তবে পুলিশের কাছে কংগ্রেস লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলে তা গ্রাহ্যের মধ্যেই আনা হয়নি বলে দাবি কংগ্রেসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy