সুনীল সিংহের সঙ্গে সরফরাজ (চিহ্নিত)। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার কর্মী হিসেবে শাসক দলের বহু নেতার ঘনিষ্ঠ ছিল কিডনি পাচার কাণ্ডে ধৃত সরফরাজ আহমেদ। তদন্তে নেমে এমনটাই জেনেছে পুলিশ। সরফরাজের বাড়ি নৈহাটিতে হলেও তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা, ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। অর্জুনের সঙ্গে তার যে বিশেষ সম্পর্ক ছিল, সে কথা পরিচিতদের বড়াই করে বলতও সরফরাজ।
শুধু অর্জুনই নন, তাঁর আত্মীয় তথা নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহের সঙ্গেও তার বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানাচ্ছেন সরফরাজের পরিচিতেরা। তৃণমূল নেতাদের একাংশের অভিযোগ, মাস দু’য়েক আগে নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সুনীলের সঙ্গে থেকেই প্রচার করেছিল সরফরাজ। দুই নেতার সঙ্গে একাধিক ছবিতে তাকে দেখাও গিয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, অর্জুন এবং সুনীলের সঙ্গে কিডনি পাচার চক্রের সদস্যের কী সম্পর্ক? যদিও ওই দুই নেতাই জানিয়েছেন, তাঁরা সরফরাজকে চেনেন না। অর্জুনের বক্তব্য, ‘‘রাজনীতি করি বলেই অনেক জায়গায় নানা অনুষ্ঠানে যেতে হয়। ফলে কে-কোথায়-কবে কী ছবি তুলল, তা বলা শক্ত।’’ প্রায় একই বক্তব্য সুনীলেরও। তিনি বলছেন, ‘‘আমরা জননেতা। অনেকেই এসে আমাদের সঙ্গে ছবি বা নিজস্বী তোলে। তারা কে, কী করে জানা সম্ভব নয়। ওই নামে আমি কাউকে চিনি না।’’
তৃণমূল নেতাদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, শুধু প্রচারই নয়, নোয়াপাড়ার উপনির্বাচনে অনেক কাজই করেছে সরফরাজ। সে সময়ে তাকে সুনীলের সঙ্গেই দেখা যেত। একাধিক ছবিতে কখনও সুনীলের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে তাকে। কখনও আবার দেখা গিয়েছে, সুনীলের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত সরফরাজ। অর্জুনের সঙ্গেও মিছিলে-প্রচারে একাধিক ছবিতে দেখা যাচ্ছে কিডনি পাচার চক্রের অন্যতম ওই সদস্যকে।
নৈহাটি এলাকার কোনও নেতার সঙ্গে অবশ্য সখ্যতা নিয়ে কোনও বড়াই করত না সে। এমনকী, নিজের এলাকার নেতাদের সঙ্গে তার কোনও ছবিও নেই। ফলে অর্জুন এবং সুনীলের সঙ্গে সরফরাজের ছবি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূলের নেতারাই। তার সঙ্গে অর্জুন এবং সুনীলের ছবি দেখিয়ে নিজের কর্তৃত্ব জাহির করত সরফরাজ। বিভিন্ন অনৈতিক কাজে সে ওই সব ছবি ব্যবহার করত বলেও অভিযোগ তৃণমূলের কিছু নেতার। পুলিশকে অবশ্য এই বিষয় নিয়ে কিছু বলেনি অভিযুক্ত।
কিডনি পাচার চক্রের মূল চাঁই আক্রমের নাগাল অবশ্য এখনও পায়নি পুলিশ। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন জানান, আনন্দপুরে তার একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে হানা দেয় নৈহাটি থানার পুলিশ। সেই ফ্ল্যাটের বাইরে আক্রমের নামের ফলকও আছে। কিন্তু ফ্ল্যাটে কেউ ছিলেন না। অন্যান্য আবাসিকেরা জানিয়েছেন, দিন তিনেক আগে পর্যন্ত আক্রম ওই ফ্ল্যাটেই ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy