বর্ধমান মেডিক্যালে দীনবন্ধু হাজরা। —নিজস্ব চিত্র
কাজ করার সময় হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, সঙ্গে রক্তাল্পতা। কলকাতার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ঘুরেও শরীর সুস্থ হয়নি। শেষে এক পরিচিতের মাধ্যমে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অনাময় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের সোনাগাছি গ্রামের দীনবন্ধু হাজরা। সেখানে এক জটিল অস্ত্রোপচার করে তাঁকে সুস্থ করেন চিকিৎসকেরা।
অনাময় হাসপাতালের সুপার অমিতাভ সাহা জানান, রোগীর হৎপিণ্ডে লাগানো কৃত্রিম ভালভের পাশে বড় ফুটো ছিল। এ সব ক্ষেত্রে নতুন ভাল্ভ লাগানোই দস্তুর। কিন্তু রোগীর শারীরিক ও আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে অন্য সিদ্ধান্ত নেন অনাময় হাসপাতালের কার্ডিওভাস্কুলার বিভাগের চিকিৎসক গৌতম দত্ত। বুধবার রাতে আড়াই ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করে একটা ছাতার মতো জিনিস ওই ফুটোয় বসিয়ে দেওয়া হয়। যাতে আর সমস্যা না হয়। হাসপাতালের দাবি, ভাল আছেন বছর পঞ্চাশের দীনবন্ধুবাবু। ওই হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগের প্রধানের দাবি, “রোগীর স্বার্থে আমরা এ রকম ঝুঁকি নিয়েছি। এ ধরনের অস্ত্রোপচার রাজ্যের মধ্যে প্রথম।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, বছর সাতেক আগে দীনবন্ধুবাবুর কৃত্রিম ভাল্ভ লাগানো হয় কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে। মাস দু’য়েক আগে আগে দর্জির কাজ করার সময় শ্বাসকষ্টের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীনবন্ধুবাবু বলেন, “রক্তাল্পতায় ভুগছি বলে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে বেশ কয়েক বার রক্ত দেওয়া হয়। তার পরেও শ্বাসকষ্ট থামছে না দেখে এক পরিচিতর কথা মতো মাসখানেক আগে বর্ধমানের হাসপাতালে ভর্তি হই। অস্ত্রোপচারের পরে ভাল আছি।”
বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে ওই রোগীর হৃৎপিণ্ডের অলিন্দ ও নিলয়ের মাঝে ‘মাইট্রাল ভাল্ভ’ লাগানো হয়েছিল। পরে দু’টি অলিন্দের মাঝে ফুটো দেখা দেয়। কয়েক বছর স্বাভাবিক থাকলেও ফুটো বাড়তে থাকায় শ্বাসকষ্ট ও রক্তাল্পতা দেখা দেয়। অমিতাভবাবুর কথায়, “ওই ফুটো থাকার জন্য রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ উল্টোমুখী হয়ে গিয়েছিল। বিশেষ পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এ সব অস্ত্রোপচারের জন্য কার্ডিওভাস্কুলারের শল্য বিভাগ থাকা দরকার। এই হাসপাতালে সে ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকেরা দক্ষতার সঙ্গে তাঁদের কাজ করেছেন। চিকিৎসার যাবতীয় খরচ ‘স্টেট ইলনেস ফান্ড’ থেকে করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy