প্রতীকী ছবি।
মৃত্যুর ছ’মাস বাদে শিকে ছিঁড়ল কান্দির বিদ্যুৎবরণ ত্রিবেদীর বরাতে। এই মার্চে রাজ্য সরকারের ওই কৃষি প্রযুক্তি সহায়কের (কেপিএস) পদোন্নতি ঘটেছে। গত নভেম্বরে প্রয়াত আর এক জন কেপিএস পুরুলিয়ার পার্থসারথি বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদোন্নতিও এই মার্চেই ঘটল।
রাজ্য কৃষি দফতরের কোনও কোনও আধিকারিক হতভম্ব। ‘‘মৃত ভোটার ভোট দেয় শুনেছিলাম! তা বলে মৃত কর্মীরও প্রোমোশন!’’ ব্লকে ব্লকে কৃষকদের পরামর্শের সঙ্গে জড়িত রাজ্যের কেপিএস পদে ৫৩৬ জনের পদোন্নতির নির্দেশ প্রকাশিত হয়েছে গত ২৭ মার্চ। তাঁদের ‘সাবঅর্ডিনেট এগ্রিলকালচার সার্ভিস’ (গ্রেড-২) ক্যাডারভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই ৫৩৬ জনের মধ্যে কম-বেশি ৪৯২টি পদোন্নতির নির্দেশেই কোনও না কোনও গোলমাল ধরা পড়েছে। ফলে, পদোন্নতির দাবিদার বেশ কয়েক জন কর্মচারী বঞ্চিত। কৃষি দফতরে আধিকারিকদের পদের বিন্যাসও ওলটপালট! কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে স্বভাবতই বিব্রত। পুরনো নির্দেশ স্থগিত রেখে নতুন নির্দেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে এমন ভুলের যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তিরও আশ্বাস দিচ্ছেন মন্ত্রী।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, মোটামুটি যত ধরনের ভুল হওয়া সম্ভব পদোন্নতির নির্দেশে তার নমুনা মিলবে। ব্যারাকপুরের কৃষি উন্নয়ন আধিকারিকের অফিসে কেপিএস পদে কর্মরত সদ্যপ্রয়াত কান্তিরঞ্জন বিশ্বাসের স্ত্রী শিপ্রা গত জানুয়ারিতেই নাবালক পুত্রদের দেখভালের দুরবস্থার কথা জানিয়ে চাকরির আবেদন করেছিলেন। তাঁর প্রয়াত স্বামীর পদোন্নতির খবর এসেছে। নদিয়ার করিমপুরের এডিএ অফিসে কর্মরত প্রদীপকুমার চক্রবর্তী গত ৩১ জানুয়ারি অবসর নিয়েছেন। পদোন্নতির তালিকায় তিনিও এক জন। প্রদীপবাবু ফোনে বললেন, ‘‘ইস্ অবসরের একটা দিন আগেও যদি অর্ডারটা আসত!’’ এ ছাড়াও, কৃষি দফতর সূত্রে নানা গরমিল উঠে এসেছে। কোথাও তফসি লি জাতি-জনজাতিদের পদে অন্য লোককে বসানো হয়েছে। কোথাও একটি পদে এক সঙ্গে দু’-তিন জনের গাদাগাদি। কোনও একটি জায়গায় অমুক পদটি ধার্য না-হলেও সেখানেই পদোন্নতির কাণ্ড ঘটেছে। শাসক দলের অনুগত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের কোর কমিটির সদস্য পার্থ চট্টোপাধ্যায় কৃষি অধিকর্তাকে চিঠি লিখতেই এ ব্যাপারে নড়ে বসে দফতর।
তবে পদোন্নতির নির্দেশগুলি ১ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার নির্দেশ জারি হলেও পঞ্চায়েত ভোটের দরুণ তা এখনই রূপায়িত হয়নি। কৃষিমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘শীঘ্রই ভুল শুধরে নতুন নির্দেশ বেরোবে। কৃষি সচিবকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy