প্রতীকী ছবি।
করোনা-কবলিত দেশে টানাপড়েন চলছে এই ভাইরাসের মোকাবিলায় ব্যবহার্য হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে। তার মধ্যেই বাজার থেকে উধাও হতে বসেছে ভিটামিন ট্যাবলেট।
ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানান, শরীরের প্রতিরোধশক্তি বৃদ্ধি করতে পারলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে বলে চাউর হয়ে গিয়েছে। ফলে প্রতিরোধশক্তি বাড়ানোর তাগিদে মাল্টিভিটামিন, ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওই সব ওষুধ কিনছেন অনেকে। ওই ওষুধ বিক্রিতে তেমন কোনও বিধিনিষেধও নেই। সব মিলিয়ে ভিটামিনের ভাঁড়ারে টান পড়তে চলছে বলে জানাচ্ছেন ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরেরা। এখনই ভিটামিন সি বাজার থেকে প্রায় উধাও। সেই সঙ্গে মাল্টি ভিটামিন আর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটও উধাও হওয়ার পথে বলে জানাচ্ছেন ওষুধের খুচরো ব্যবসায়ীরা।
এক ওষুধ ডিস্ট্রিবিউটর জানান, এখন হোয়াটসঅ্যাপ আর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিরোধশক্তি বর্ধক ওষুধের নাম-সহ নানান ব্যাখ্যা মিলছে। আর তা দেখে সাধারণ মানুষ নির্বিচারে এই সব ওষুধ কিনছেন। প্রয়োজনের থেকে বেশি ওষুধ কিনে মজুত করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সজল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চিকিৎসকের লিখিত অনুমতি ছাড়া ওই ওষুধ বিক্রি বন্ধ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে।’’
ওই সব ওষুধ খেলে সত্যিই কি করোনা প্রতিরোধ করার শক্তি গড়ে ওঠে? ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী বলেন, ‘‘ওই সব ওষুধ খেলে করোনা সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে, এমন কোনও তথ্য আমার জানা নেই। তবে শুনছি, হুজুগের বশে ঢালাও ভাবে ওই সব ওষুধ কিনে খাওয়া হচ্ছে। আচমকা প্রয়োজন ছাড়া বিপুল পরিমাণে ওই সব ওষুধ খেতে শুরু করলে শারীরিক গোলযোগ দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধই খাওয়া ঠিক নয়।’’ ওষুধ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘‘আচমকা ওই সব ওষুধ খেতে শুরু করলে প্রতিরোধশক্তি তৈরি হয় না। আমরা প্রতিদিন যে-সবুজ আনাজপাতি, ফল খাই, মাছ-মাংস-ডিমের মতো যে-সব আমিষ খাবার খাই, তাতেই প্রতিরোধশক্তি গড়ে ওঠে। এটা একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। শরীরে কোনও খনিজ ও ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে ওই সব ওষুধ নির্দিষ্ট মাত্রায় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।’’ সরকারি হাসপাতালের এক মেডিসিনের চিকিৎসক জানাচ্ছেন, শরীরে খনিজ, ভিটামিনের পরিমাণ হয়তো ঠিকঠাকই আছে। সে-ক্ষেত্রে অকারণে ওই সব ওষুধ খেলে হৃদ্যন্ত্র থেকে কিডনি পর্যন্ত বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy