ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীরে কাজে গিয়ে আটকে পড়া এ রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরানোর কাজ শুরু করল সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার জানান, রাজ্যে ফিরে আসতে চান এ রকম ১৩১ জন শ্রমিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের উদ্ধার করে জম্মুতে আনা হচ্ছে। জম্মু থেকে ট্রেনে এ রাজ্যে নিয়ে আসা হবে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মূলত মুর্শিদাবাদ ও কোচবিহারের বাসিন্দা ওই শ্রমিকেরা শুক্রবার রাতে জম্মু এসে পৌঁছবেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, শ্রমিকদের ফেরানোর বিষয়টি দেখভাল করার জন্য রাজ্যের দুই পুলিশ আধিকারিক সঞ্জয় সিংহ এবং অনুপ জয়সওয়ালকে কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছে। দিল্লিতে বাংলার রেসিডেন্ট কমিশনারও সক্রিয়। জম্মু থেকে শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য ট্রেনে আলাদা কামরার ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। শ্রমিকদের নিজের নিজের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ভার রাজ্য সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বারামুলায় আটকে পড়া বীরভূম ও মালদহের ৯ শ্রমিককে শুক্রবারই সেনার গাড়িতে শ্রীনগরে আনা হয়েছে। এঁদের মধ্যে বীরভূমের পাইকরের আট জন আর মালদহের কালিয়াচকের এক জন রয়েছেন। এই দলেই রয়েছেন পাইকর থানার নয়াগ্রামের আসগার ওরফে ফাজু শেখ। শুক্রবার সকালে তিনিই প্রথমে ফোন করে পরিবারকে তা জানান। ফাজুর স্ত্রী নাজেরা বিবি বলছেন, ‘‘ফোন পেয়ে ধড়ে যেন প্রাণ পেলাম! এ বার থেকে নুন-ভাত খেয়ে থাকব তাও ঠিক আছে। কিন্তু, আর কাশ্মীরে কাজে যেতে দেব না।’’
ফাজুর দাবি, মঙ্গলবার জঙ্গিদের গুলিতে মুর্শিদাবাদের পাঁচ শ্রমিকের খুনের খবর জানাজানি হতে সে রাতেই প্রাণভয়ে তাঁরা গোপন ডেরায় চলে যান। অঘটনের আশঙ্কায় সেই ডেরার কথা এত দিন কেউ পরিবারকেও জানাননি। এ দিন শ্রীনগর থেকে ফাজু বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে সেনার গাড়ি এসে আমাদের জম্মু পৌঁছে দেবে বলে জানায়। সেনাবাহিনীর গাড়িতেই দুপুরে শ্রীনগর পৌঁছেছি। বাড়ি ফেরার জন্য মন ছটফট করছে।’’
ফাজু রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে আছেন ভাই ইব্রাহিম শেখ। তাঁদের সঙ্গেই ধানচাষের কাজে কাশ্মীর যান নয়াগ্রাম বদিরপুকুর পাড়ার ডাবলু শেখ, খালেক শেখ, নইমউদ্দিন, ইমু শেখ, পাইকরের দাঁতুড়া গ্রামের সামিরুল বাসার এবং কালিয়াচকের নাদেম শেখ। গ্রামে সে রকম রোজগার নেই। সারা বছর কাজ মেলে না। কিছু বাড়তি রোজগারের তাগিদেই কাশ্মীরে যেতেন ওঁরা। মঙ্গলবারের হত্যালীলার পরে সেই পথটুকুও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। স্ত্রীর কথায় সায় দিয়ে ফাজুও বলছেন, ‘‘এ ভাবে হয় না। বেঁচে থাকতে আর কাশ্মীরে আসব না।’’
এ রাজ্যের শ্রমিক কাশ্মীরে আটকে রয়েছেন, বৃহস্পতিবার পুলিশের হাতে এমন একটি টেলিফোন কথোপকথন আসে। তাতে এক শ্রমিককে বলতে শোনা যায়, তাঁরা খুবই আতঙ্কিত। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজ্যে ফিরতে চান। কিন্তু ভয় পাচ্ছেন, যদি পথে কিছু ঘটে যায়। এই খবর পেয়েই এ রাজ্যের ডিজি কাশ্মীর পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy