Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Safe Home

‘সেফ হোম’ নিয়ে জারি সরকারি অ্যাডভাইজ়রি

‘সেফ হোম’ নিয়ে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে তা অ্যাডভাইজ়রির বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২০ ০৭:১৩
Share: Save:

বেসরকারি হাসপাতাল শুধু নয়। সরকারি ‘সেফ হোমে’ পরিষেবা নিশ্চিত করতেও এ বার অ্যাডভাইজ়রি জারি করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এরই মধ্যে কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত বালটিকুরি ‘সেফ হোম’কে আগামিদিনে কোভিড হাসপাতাল তৈরির লক্ষ্যে এগোচ্ছে স্বাস্থ্য ভবন। বুধবার এ নিয়ে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর সঙ্গে কলকাতা পুরসভায় একটি বৈঠক হয় বলে খবর।

কোথাও পরিদর্শনে গিয়ে ‘সেফ হোমে’র ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের দেখা পাচ্ছেন না স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিনিধিরা। কোথাও আবার বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য সাফাইয়ের নির্দেশিকা শিকেয় উঠেছে। ‘সেফ হোমে’র আবাসিকদের শারীরিক পরীক্ষা নিয়মিত হচ্ছে না, এমন অভিযোগও দুর্লভ নয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নিমতায় যে ‘সেফ হোম’ গড়া হয়েছে তার পরিকাঠামো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে রিপোর্ট দিয়েছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। ‘সেফ হোমে’ রূপান্তরিত বারাসত স্টেডিয়াম ২৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার পরে মাত্র তিনদিন সেখানে চিকিৎসক গিয়েছেন বলে খবর! অক্সিজেন সরবরাহের সুবিধা, ইসিজি’র ব্যবস্থাও পরিদর্শক দলের চোখে পড়েনি। খড়দহ স্বামী বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে রোগীদের টপ-শিট রক্ষণাবেক্ষণ, নার্সদের দুর্ব্যবহার নিয়ে পরিদর্শক দলের সদস্যেরা বিরূপ মন্তব্য করেছেন বলে খবর।

এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি নবেকলেবরে ‘সেফ হোম’ সংক্রান্ত অ্যাডভাইজ়রি জারি করেছে স্বাস্থ্যভবন। ‘সেফ হোম’ নিয়ে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে তা অ্যাডভাইজ়রির বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিন পাতার পরামর্শনামায় মোট ২১ দফা নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, পঞ্চাশ শয্যার বেশি রয়েছে এমন সেফ হোমগুলিতে চব্বিশ ঘণ্টা নিয়মিত চিকিৎসক এবং নার্সের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। পর্যাপ্ত সংখ্যক অক্সিজেন সিলিন্ডার, রক্তচাপ মাপার যন্ত্র, পালস অক্সিমিটার রাখার পাশাপাশি প্রতিদিন দু’বেলা ‘সেফ হোমে’র আবাসিকদের শারীরিক পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। আবাসিকদের মধ্যে কারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ওই ‘সেফ হোমে’র যুক্ত কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করাও বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি, রোগীরা যাতে তাঁদের প্রয়োজনের কথা জানাতে পারেন সে জন্য চব্বিশ ঘণ্টার একটি হেল্পলাইন খোলার কথা অ্যাডভাইজ়রিতে বলা হয়েছে। ‘সেফ হোমে’ খাবারের মেনুও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রশ্ন চিকিৎসার মান নিয়েও

ঘটনাচক্রে, বালটিকুরির যে ‘সেফ হোম’কে আগামিদিনে কোভিড হাসপাতাল তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে সেখানেই পরিদর্শনে গিয়েই স্বাস্থ্য ভবনের প্রতিনিধিরা কথা বলার লোক খুঁজে পাননি! পুরসভা সূত্রের খবর, বালটিকুরিতে অক্সিজেনের পাইপলাইন থাকায় ৪০০ শয্যার ‘সেফ হোম’কে হাসপাতালে পরিণত করার প্রস্তাব দেন পুর কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যসচিব তাতে সম্মতি প্রকাশ করে কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন বলে খবর।

পরিদর্শক দলের সদস্য চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, কো-মর্বিডিটি থাকার কারণে অনেক সিনিয়র চিকিৎসক ‘সেফ হোমে’ যাওয়ার প্রশ্নে অনিচ্ছুক। রোগীদের ছুটি দেওয়ার প্রশ্নেও ‘সেফ হোম’গুলিতে অভিন্ন নির্দেশিকা অনুসরণ করা উচিত। এ সব কথা মাথায় রেখেই অ্যাডভাইজ়রি জারি করা হয়েছে।

‘সেফ হোমে’র পরিকাঠামো নিয়ে প্রথম থেকে সরব ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘সেফ হোমে যে সকল উপসর্গহীন, মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তেরা রয়েছেন তাঁরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। সেফ হোমে অসুস্থ হলে সময়ে চিকিৎসা মিলবে কি না, এই বিষয়টি মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। মানুষের মধ্যে ভরসার জায়গা তৈরি করতে সেফ হোমে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, নার্সের ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্য ১২-১৫ শয্যার সেফ হোম না গড়ে সরকারের উচিত বড় সেফ হোম গড়ে তোলা। নইলে সেফ হোমের সংখ্যাবৃদ্ধি ছাড়া প্রাপ্তির ঝুলি শূন্য।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Safe Home Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy