‘কর্মসংস্কৃতি’ ফেরাতে নির্দেশ নবান্নের। ফাইল চিত্র।
সরকারি কর্মচারীদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করল নবান্ন। মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে কর্মচারীদের একাংশের আন্দোলনের আবহেই রাজ্যের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদের সময়ানুবর্তী হওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হল। শনিবার রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে একটি নির্দিষ্ট সাল-তারিখের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রকের জারি করা ওই দিনের বিধি অনুসারে নির্দিষ্ট সময়েই দফতরে আসতে হবে সরকারি কর্মচারীদের। আবার নির্দিষ্ট সময়েই দফতর থেকে বেরোতে পারবেন না তাঁরা। তবে দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত, এই আধ ঘণ্টা অফিস থেকে বেরোতে পারবেন সরকারি কর্মচারীরা। অন্যান্য ক্ষেত্রে কিংবা জরুরি প্রয়োজনে অফিস ছাড়তে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
এই নিয়মের অন্যথা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এমনকি নির্দিষ্ট দিনের জন্য সেই কর্মচারীকে ‘অনুপস্থিত’ হিসাবে দেখানো হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। গত বুধবার নবান্নের ভূমিরাজস্ব দফতর এবং অর্থ দফতর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, বেলার দিকেও অধিকাংশ দফতরে সব কর্মী উপস্থিত না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই নবান্নের তরফে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
শনিবারই আরও একটি বি়জ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়ে কর্মবিরতিতে যোগ দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। আগামী সোমবার থেকেই বকেয়া ডিএ-র দাবিতে কর্মবিরতির পথে হাঁটছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে তেমনটাই জানানো হয়েছে। তার আগেই, শনিবার রাজ্যের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল যে, সোমবার থেকে চারটি নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া ছুটি নিতে পারবেন না সরকারি এবং সরকার পোষিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। কোনও কর্মী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে, পরিবারে নিকটাত্মীয় কেউ মারা গেলে কিংবা কেউ মাতৃত্বকালীন এবং অসুস্থতাজনিত ছুটিতে থাকলে, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। শারীরিক অসুস্থতার জন্য ১৯ তারিখ অর্থাৎ শুক্রবার থেকে অনুপস্থিত থাকলে, তাঁদের ছুটিও মঞ্জুর করা হবে। এই সময়ে নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অর্ধছুটিও নিতে পারবেন না সরকারি কর্মীরা। অফিসে গরহাজির থাকলে অনুপস্থিতির কারণ সবিস্তার জানাতে হবে। সেই কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলে তবেই মিলবে ছুটি। তবে সরকারি কর্মচারী সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ এবং কোঅর্ডিনেশন কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, তারা সোমবার থেকে কোনও কর্মবিরতির পথে হাঁটছেন না। সরকার কেন এমন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে, তা তাদের জানা নেই বলেও জানান দু’টি সংগঠনের নেতারা। তবে কোঅর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, সরকার যে ভাবে অফিসে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে, তার প্রতিবাদে তাঁরা টিফিন বিরতিতে বিক্ষোভ দেখাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy