এক মাসের কর্মসূচি। — ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ২০১৪ সালের মে মাসে। সেই হিসাবে মোদী সরকারের ন’বছর পূর্ণ হতে চলেছে। আর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য দেশ জুড়ে যে প্রস্তুতি বিজেপি শুরু করে দিয়েছে, তাকে তারা চরম মাত্রায় নিয়ে যেতে চলেছে চলতি মাসেই। ৩০ মে থেকে ৩০ জুন এক মাসের টানা কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য বিজেপি। যার অনেকটাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ক্যালেন্ডার মেনে। আর গ্রীষ্ম জুড়ে গোটা কর্মসূচির মূল লক্ষ্য, সাধারণ ভোটার থেকে সমাজের বিশিষ্ট মহলের সঙ্গে গেরুয়া শিবিরের উষ্ণ সম্পর্ক স্থাপন।
রবিবার রাজ্য বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক বসতে চলেছে কলকাতায়। সেখানে সব সাংসদ, বিধায়ক তো বটেই, বাংলা থেকে হওয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং জেলা স্তরের শীর্ষ নেতাদের ডাকা হয়েছে। রাজ্য বিজেপি ঠিক করেছে এর তিন দিনের মধ্যে জেলায় জেলায় কর্মসমিতির বৈঠক হবে। প্রতিটিতে রাজ্য স্তরের কোনও নেতা উপস্থিত থাকবেন। এই সব বৈঠকে প্রতিটি জেলা স্তরে যাঁদের উপরে মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি কর্মসূচির দায়িত্ব রয়েছে তাঁদের ডাকতে হবে। বুধবারের মধ্যে জেলা কার্যকারিণী হয়ে গেলে পরের তিন দিনে রাজ্যের সব মণ্ডলে একই ধরনের বৈঠক করতে হবে। সেখানে বুথ সভাপতিদেরও থাকতে হবে।
মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি পালনের জন্য রাজ্যে প্রথমে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের নেতৃত্বে সাত জনের একটি দল গঠন করা হয়েছিল। এ বার আরও বড় কমিটি তৈরি হয়েছে। দলের সাংগঠনিক জো়ন হিসাবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নেতাদের। এক মাসের এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মহাজনসম্পর্ক অভিযান’।
এক মাসের কর্মসূচির মধ্যে দু’টি দিন উল্লেখযোগ্য। শুরুর দিন অর্থাৎ ৩০ মে দিল্লি থেকে কর্মসূচির সূচনা করবেন মোদী। সে দিনই অথবা ৩১ মে একটি জনসভা হবে। ২৩ জুন জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুদিনে আবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখবেন মোদী। সেই দিন বুথ স্তরে সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই দিন মোদী শুধু বলবেন না, কথাও শুনবেন। মোদীর ভার্চুয়াল বার্তালাপ কর্মসূচির দু’দিন আগে ২১ জুন বিজেপিও দলীয় ভাবে ‘বিশ্ব যোগ দিবস’ পালন করবে।
এক মাসের কর্মসূচি মোট দু’ভাগে হবে। শুরুতে ‘জনসম্পর্ক কর্মসূচি’। এ জন্য বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, শিল্পী, শিল্পপতি, শহিদ পরিবার-সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীদের নামের তালিকা তৈরির জন্যও একটি দল গঠন করা হয়েছে। ২২ জুনের মধ্যে প্রতিটি রাজ্যেই বড় সমাবেশ করবে কেন্দ্রীয় বিজেপি। মোট ৫১টি জনসভা হবে। তবে রাজ্যে কবে ও কোথায় সেই জনসভা হতে পারে তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে রাজ্যে মোট ১০০টি জনসভা করবে বিজেপি। তাতে রাজ্য সভাপতি, বিরোধী দলনেতা তো বটেই সাংসদ, বিধায়কেরা প্রধান ভূমিকা নেবেন। থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নেতারাও।
এই পর্বে জেলা থেকে রাজ্য স্তরে বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে সম্মেলন হবে। ঠিক হয়েছে, ২৫ জুন হবে ওই সম্মেলন। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের এই দিনেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। কোনও নির্দিষ্ট দিন স্থির না হলেও এই পর্বে জেলায় জেলায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে সম্মেলন করবে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে যে সব জায়গায় কোনও প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্প চলছে, সেখানে যাবেন রাজ্যস্তরের নেতারা। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিকাশ তীর্থ পরিদর্শন’।
বিজেপির ভিতরে আদি ও নব্য বিবাদ সকলেরই জানা। মোদীর ন’বছর পূর্তি কর্মসূচির মাধ্যমে সেই বিবাদ দূর করারও পরিকল্পনা রয়েছে। ঠিক হয়েছে, বিধানসভা স্তরে পার্টির পুরনো ও প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে বর্তমান নেতারা সম্মেলন করবেন। তাঁদের কথা শুনবেন। শেষে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও দলের সব শাখা সংগঠনকে নিয়ে মোর্চার সংযুক্ত সম্মেলন এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে বিধানসভা স্তরে উপভোক্তা সম্মেলনের পরিকল্পনা রয়েছে। একেবারে শেষ পর্বে ২০ থেকে ৩০ জুন হবে গৃহসম্পর্ক অভিযান। সেই সময়ে সর্ব স্তরের নেতারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy