Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Government

ক্ষুদ্র শিল্পে কেন্দ্রের পাল্টা সুবিধা প্রকল্প বঙ্গেরও

পরিস্থিতিতে পরিধি বাড়িয়ে ‘বাংলাশ্রী’ নামে সেই প্রকল্প ফের শুরু করেছে রাজ্য।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:১৫
Share: Save:

‘কে বা আগে প্রাণ করিবেক দান’ নয়, কে কতটা সুবিধা দান করতে পারে, কেন্দ্র আর রাজ্যের মধ্যে যেন তারই প্রতিযোগিতা! লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই) বাঁচাতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। একই উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত করে সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য। ২০১৩-য় রাজ্যে চালু করা ওই ইনসেন্টিভ স্কিম বা আর্থিক সুবিধার প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায় ২০১৮ সালে। চলতি পরিস্থিতিতে পরিধি বাড়িয়ে ‘বাংলাশ্রী’ নামে সেই প্রকল্প ফের শুরু করেছে রাজ্য।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগের প্রকল্পে শুধু নতুন শিল্পে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হত। কোনও চালু কোম্পানি রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় দ্বিতীয় বা তৃতীয় শাখা খুলে নতুন পণ্য উৎপাদন শুরু করলে সেগুলিকেও নতুন উদ্যোগ হিসেবে ধরে সুবিধা দেওয়া হত। এ বছর নতুন করে শুরু হওয়া প্রকল্পের আওতায় পুরনো পরিকাঠামোয় একই পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি-সহ শিল্প সম্প্রসারণেও সুবিধা মিলবে। আগে বস্ত্রশিল্পের জন্য পৃথক ইনসেন্টিভ নীতি ছিল। এখনকার প্রকল্পে সেই শিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “আগের প্রকল্পটিকে ঘিরে শিল্পপতিরা নানান প্রস্তাব দেন সরকারের কাছে। সেই সব প্রস্তাব খতিয়ে দেখে নতুন করে প্রকল্প চালু করা হল। এতে এই ক্ষেত্রের সব ব্যবসায়ীরই সুবিধা হবে। কোনও চালু কোম্পানি তাদের পুরনো পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ ঘটিয়ে উৎপাদন বাড়াতে চাইলেও এ বার আর্থিক সুবিধা পাবে। কারণ, তাতে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বাড়বে।”

প্রশাসনের একাংশ এবং সরকারি পরামর্শদাতাদের অনেকের ব্যাখ্যা, লকডাউনে ব্যবসার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থায় নতুন প্রকল্পে লগ্নি করা বেশ কষ্টসাধ্য। বরং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে চালু প্রকল্পের সম্প্রসারণ বা আধুনিকীকরণের সুযোগ থাকে। বিভিন্ন শিল্পকে সহজে নিশ্চিত পুঁজির ব্যবস্থা করে দিতে পারলে উৎপাদন সচল হবে। গড়াবে অর্থনীতির চাকা। অভ্যন্তরীণ গড় উৎপাদনে দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জায়গা ধরে রাখা যাবে। কেন্দ্র বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের। এই অবস্থায় রাজ্য হাত গুটিয়ে বসে থাকলে জনমানসে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। সে-দিক থেকে রাজ্যের এই পদক্ষেপ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

এখনকার প্রকল্পে রাজ্যকে পাঁচটি জ়োনে ভাগ করে সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে পিছিয়ে পড়া এলাকা। জ়োনের ভিত্তিতে অতি ক্ষুদ্র শিল্পে স্থায়ী পুঁজির উপরে ২৫, ৪০ এবং ৬০% ইনসেন্টিভের প্রস্তাব রয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্পে স্থায়ী পুঁজির উপরে ১৫, ৩০ এবং ৪০% আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। মহিলা, তফসিলি জাতি-জনজাতি গোষ্ঠী এবং সংখ্যালঘু উদ্যোগপতি পরিচালিত শিল্পোদ্যোগ অতিরিক্ত ২০% আর্থিক সুবিধা পাবে। মেয়াদি ঋণ, বিদ্যুৎ মাসুল, স্ট্যাম্প ডিউটি, রেজিস্ট্রেশন ফি, জিএসটি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেও আর্থিক সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার।

লকডাউনে সব ব্যবসার ক্ষতি হলেও এমএসএমই-র মাধ্যমে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ারের মতো বিভিন্ন জিনিসের উৎপাদন চালু রেখেছিল সরকার। এতে বার বার সাফল্যের দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শিল্প মহলের একাংশের বক্তব্য, আগের ইনসেন্টিভ স্কিমের সুবিধা ১০০ ভাগ উপভোক্তার কাছে পৌঁছয়নি। তবে রাজ্যের বক্তব্য, গত অর্থবর্ষে পুরনো দাবিগুলি মিলিয়ে ৯০ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে নতুন ইনসেন্টিভ স্কিমে ১০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেই বরাদ্দ বাড়ানো হবে। এ বারের স্কিম গত ১ এপ্রিল থেকে বলবৎ হয়ে চলবে ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Government MSME
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy