Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Jagdeep Dhankhar

রাজ্যে ‘পরিবর্তন আসা উচিত’, ভোটমুখী বাংলায় আহ্বান রাজ্যপাল ধনখড়ের

ধনখড়ের এ হেন মন্তব্যের পর রাজ্যপালের পদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:০০
Share: Save:

এ বার রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর ডাক দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শুক্রবার বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল। সেখানে স্বাধীনতা আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য এবং ইতিহাসের কথা টেনে এনে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার ৭৫ বছরে পরিবর্তন আসা উচিত।’’ প্রসঙ্গত, ২০২১-এ স্বাধীনতার ৭৫ বছর। রাজ্যপালের দাবি, এই মুহূর্তে গোটা দেশ এগিয়ে চলেছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই রাজ্যে ‘পরিবর্তন’ আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন ধনখড়। বাঙালির ঐতিহ্যের আবেগে ‘ঘা’ দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যপাল আসলে গেরুয়াশিবিরের কথা আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। ধনখড়ের এ হেন মন্তব্যের পর রাজ্যপালের পদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।

ভোটমুখী বাংলায় শুক্রবার ‘পরিবর্তন’-এর পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্যপাল। বেশ কয়েক বার উচ্চারণ করলেন ‘পরিবর্তন’ শব্দটাও। এ দিন ধনখড় বলেন, ‘‘আমার মনে কোনও সংশয় নেই যে এক সময় নালন্দা এবং তক্ষশীলা যে ভাবে গোটা দুনিয়ার মানুষকে রাস্তা দেখিয়েছিল, সে ভাবে বিশ্বভারতীও নতুন কীর্তি স্থাপন করবে। দেশে পরিবর্তনের অংশ এবং কারণ দুটোই হয়ে উঠবে।’’ এই সুর বজায় রেখেই রাজ্যপালের পরর্বতী বয়ান, ‘‘ইতিবাচক ভাবে ভাবুন। প্রত্যেক বিষয়ে খুঁত ধরা ভাল নয়। যদি দেখেনও, তা হলে বলুন। ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এমনই আতঙ্ক যে লোকে বলছেন না পর্যন্ত, হ্যাঁ সত্যিই ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।’’ এই সূত্রেই বাঙালির আবেগে ঘা দেওয়ার চেষ্টাও করেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘২০২১-এ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপুর্তি। স্বাধীনতার সময় পশ্চিমবঙ্গ কোথায় ছিল? কোন শিখরে ছিল। কত উদ্যোগ ছিল। দেশের জন্য কত অবদান ছিল। কিন্তু দশকের পর দশক তা ক্রমশ নেমেছে। ভাবুন, কেন এমন হল? কী কারণে হল? স্বাধীনতার ৭৫ বছরে পরিবর্তন আসা উচিত। পশ্চিমবঙ্গের শিখরে যাওয়া উচিত। পুঁজি এবং শিল্পের এই রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়া বন্ধ হওয়া উচিত। ক্ষুদ্র ভাবনা এবং নেতিবাচক মানসিকতা দিয়ে কখনই কোনও কার্যসিদ্ধি হয় না। দেশ কত ব্যাপক এবং মৌলিক ভাবে বদলেছে। গোটা দুনিয়ায় আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে। এটা ভাবতে হবে।’’ দেশের সঙ্গে এ রাজ্যের তুলনা টেনে ধনখড়ের বার্তা চূড়ান্ত ভাবে রাজনৈতিক বলেই মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রক্তপাতহীন, নির্ভীক ভাবে ভোট হোক, এটা চাই।’’ পাশাপাশি, সরকারি কর্মচারীদেরও রাজনীতি না করার পরামর্শ ফের এক বার দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, রাজ্যে ‘‘আতঙ্ক কতটা, তা রাজ্যপাল ছাড়া কেউ জানেন না। যাঁরা ভয় পাচ্ছেন, তাঁরা আমার সামনে রয়েছেন।’’ রাজ্যের পরিবেশ এমন হলে তা নিয়ে কি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে, রাজ্যপাল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যা আলোচনা করেছি তা কখনও প্রকাশ্যে আনিনি। উনিও আনেননি।’’ এই সূত্রে প্রশাসনিক কর্তাদেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ধনখড়ের হুঙ্কার, ‘‘যে আইন হাতে নেবে, সে পুলিশ বা প্রশাসন যেই হোক সে ছাড় পাবে না। আমার ভাল লেগেছে, এটা আধিকারিকরাও বুঝে গিয়েছেন। আমি ওঁদের বন্ধু। আমি জানি, যখন গাছ পড়বে তখন ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হবে। তাই সাবধান করে দিচ্ছি। আমি ওঁদের বলছি, আপনাদের কাজ রাজনীতি করা কাজ নয়।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আইনের উপরে রাজ্যপালও নন। যে আইন নিয়ে খেলবে, সে আসলে আগুন নিয়ে খেলবে।’’

ধনখড়ের মন্তব্যে তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘রাজ্যপালের মাথার ঠিক নেই। ওঁর কোনও সম্মান বোধ নেই। এ সব কথা যে বলা উচিত নয়, সেই বোধটাও ওঁর নেই। আমরা অনেক বলেছি। কিন্তু উনি বোধবুদ্ধিহীন। উনি যে কোনও ভাবে ওঁর বিজেপি মনিবদের খুশি করার খেলায় মেতে আছেন। ওঁকে নিয়ে মাথা ঘামাবার সত্যিই আমাদের কোনও সময় নেই। ওঁর পদটাই আছে। আর কী আছে?’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Jagdeep Dhankhar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy