(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং (ডান দিকে) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা প্রসঙ্গে শনিবার বিকেলেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছিলেন, ‘‘এক জন রাজ্যপালের যা কর্তব্য, তাই করব।’’ তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রবিবার দিল্লি গেলেন রাজ্যপাল বোস। রাজধানীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করতে পারেন তিনি। ফলে শাসক এবং বিরোধী— দুই শিবিরেরই প্রশ্ন, রাজ্যপাল কি তাঁর সেই ‘কর্তব্য’ করতেই দিল্লি গেলেন ? পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী রিপোর্ট জমা দিতেই কি বাংলার রাজ্যপালের রাজধানীযাত্রা?
শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের সকাল থেকেই পথে নেমেছিলেন রাজ্যপাল। গাড়িতে একের পর এক বুথ পরিদর্শন করেছেন তিনি। সরেজমিনে দেখেছেন ভোট পরিস্থিতি। শুনেছেন ভোটারদের অভিযোগ, এমনকি, ভোটকর্মী এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কথাও। কিন্তু পরে সাংবাদিক বৈঠকে সে ভাবে কিছু বলতে শোনা যায়নি রাজ্যপালকে। জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত ভোট চলাকালীন, হিংসা, খুন, বোমাবাজি, গুলি সংঘর্ষ, ভোট লুট, ব্যালট বাক্স নষ্ট করা, বুথদখল কোনও অভিযোগই বাদ যায়নি। এমনকি, ভোট চলাকালীন রাজ্যে ১৫ জনের মৃত্যুর অভিযোগও করেছেন বিরোধীরা। অথচ ভোট শেষ হওয়ার পর রাজ্যপাল যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তখন তাঁর কাছে পঞ্চায়েত হিংসা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘ভোট বুলেটে নয়, ব্যালটে হওয়া উচিত।’’ এ ব্যাপারে তিনি কি কোনও পদক্ষেপ করতে চান? সে প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘একজন রাজ্যপালের যা করণীয়, তা-ই করব।’’ এর পরই রবিবার রাজ্যপালের দিল্লি যাওয়ার খবর এল।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, দিল্লিতে রাজ্যপাল বোস পৌঁছনোর পর তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেখাও হতে পারে। তবে দিল্লির থেকে তলব পেয়েই রাজ্যপালের রাজধানীযাত্রা, না কি তিনি নিজেই দিল্লি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়।
এর আগেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের বিভিন্ন পর্যায়ে হিংসার জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রকাশ্যে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহের উদাসীনতার সমালোচনা করে রাজ্যপাল বোস এ কথাও বলেছিলেন যে রাজীব বাংলার মানুষকে হতাশ করেছেন। ম্যাকবেথের সংলাপ টেনে এনে রাজ্যপাল বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনারের হাতে এত রক্ত লেগে রয়েছে যে পবিত্র গঙ্গা জলে ধুলেও সেই রক্তের দাগ মুছবে না।
ভোট ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যপাল এবং নির্বাচন কমিশনের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছিল। ভোট ঘোষণার পর থেকে বাংলায় যে সন্ত্রাসের ছবি দেখা গিয়েছিল, তা নিয়ে বার বার অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এমনকি, তিনি নিজে বার বার সমস্যাদীর্ণ এলাকাগুলিতে ছুটে গিয়েছেন জেলায় জেলায়। রাজ ভবনে খুলেছেন পিসরুম।
যদিও রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পাল্টা আবার বাংলার শাসক দল তৃণমূল বলেছিল, রাজ্যপাল আদতে এই সব করছেন কেন্দ্রের আদেশে। এবং রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘দিল্লি থেকে যে ভাবে আদেশ আসছে, রাজ্যপাল তাঁর সীমিত ক্ষমতা ও এক্তিয়ার অনুযায়ী, তা পালন করার চেষ্টা করছেন।’’ অভিষেকের যুক্তি ছিল, তা না হলে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার সময় রাজ্যপাল রাজভবনে পিস রুম খোলেনননি কেন? তাতে কোনও রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাবে না বলে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy