মুর্শিদাবাদের মির্জাপুরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
একটা সময় সারা দেশ জানত, বালুচরি শাড়ির আঁতুড় ঘর মুর্শিদাবাদই। কিন্তু এখন আরও নানা জায়গায় উৎকৃষ্ট মানের বালুচরি তৈরি হয়, মুর্শিদাবাদে তৈরি এই শাড়ির কদর আগের থেকে কমেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার কারণ মান পড়ে যাওয়া নয়, বরং, প্রচারের অভাব। সেই অভাবটাই ঘোচাতে প্রবাদপ্রতিম মুর্শিদাবাদ সিল্ককে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে তাঁতশিল্পীদের আধুনিক বয়ন শিল্পের সঙ্গে পরিচয়ও করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হবে নয়া প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ।
জেলার মির্জাপুরের ২৫ জন দক্ষ শিল্পীকে নিয়ে শুরু হল সেই যাত্রা। তাঁতিদের সাহায্যের জন্য এক সময় গ্রামে গড়ে উঠেছিল সাত সাতটি সমবায় সমিতি। এখন বেশির ভাগই বন্ধ, না হয় অচল। জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি ঝর্না দাস জানান, বর্ধিষ্ণু গ্রাম মির্জাপুরে এক সময় প্রধান জীবিকাই ছিল তাঁত। শ’ছয়েক তাঁত ছিল গ্রামে। এখন তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। মূলত গরদ, জামদানি, বালুচরি শাড়ি তৈরি হয় এখানে। তাঁর কথায়, ‘‘মির্জাপুরে যে গুণমানের গরদ সিল্ক তৈরি হয়, সেই তুলনায় প্রচার প্রায় নেই বললেই চলে। ইন্টারনেটের যুগে যেখানে অনলাইন শপিং বাড়ছে, তখন মির্জাপুর তার দুর্দান্ত সম্ভার নিয়ে পড়ে রয়েছে সেই তিমিরেই।”
মুর্শিদাবাদে মির্জাপুর সিল্কের উপরে সীতাহরণ, জটায়ু বধ, শকুন্তলা সহ নানা আখ্যানের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হত। এখন তাতে লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সাদা সিল্কের সুতোকে বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে তা দিয়েই তৈরি হচ্ছে রঙিন শাড়ি। পশ্চিমবঙ্গ খাদি উন্নয়ন সমিতির জেলা আধিকারিক দেবর্ষি রায় বলেন, “আমরা চাই মুর্শিদাবাদের একটি নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করতে। যেমন বালুচরি মানেই জানি, সেখানে কোনও দেবদেবীর মূর্তি, পুরাণের ঘটনাকে ফুটিয়ে তোলা। এই নয়া ব্র্যান্ডিংয়ে হাজারদুয়ারি, জগৎ শেঠের বাড়ির ছবি, কর্ণসুবর্ণের ধ্বংসাবশেষের ছবি দিয়ে একটি নয়া প্রেক্ষাপট তৈরি করা হবে। তাতে ক্রেতারা সহজেই বুঝতে পারবেন এই সিল্ক মুর্শিদাবাদের।’’
জেলা শাসক শরদ দ্বিবেদীও বলছেন, “মুর্শিদাবাদের নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য রয়েছে। রায়বেশে, আলকাপ যেমন। সে সবও এই কাজের মধ্যে যদি তুলে ধরতে পারা যায়, তবে শাড়িতে হাত দিয়েই ক্রেতারা বুঝতে পারবেন এটা মুর্শিদাবাদ সিল্ক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy