প্রতীকী ছবি।
নৌ-শিল্পে বঙ্গ একদা শুধু ভারতে নয়, বিখ্যাত ছিল বহির্ভারতেও। সে-দিন গিয়েছে। তার পরে এসেছে যন্ত্রনৌকা বা ভুটভুটি। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটছে হামেশাই। তাই সেই ভুটভুটি সংস্কারে নেমেছে রাজ্য সরকার। সেই সংস্কার পর্বের অঙ্গ হিসেবেই মহারাষ্ট্রের ‘মাহীন্দ্রা মেরিন’ সংস্থাকে এ রাজ্যে যন্ত্রনৌকা তৈরির কারখানা গড়ার অনুরোধ জানালেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
সুন্দরবন-সহ বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য মানুষ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যে-সব যন্ত্রচালিত নৌকায় যাতায়াত করেন, সেগুলিকে কী ভাবে আরও বেশি নিরাপদ করে গড়ে তোলা যায়, তার দিশা খুঁজতে মঙ্গলবার নৌকা নির্মাণ সংস্থাগুলিকে ‘কনক্লেভ’-এ ডেকেছিল পরিবহণ দফতর। মন্ত্রী সেখানেই মহারাষ্ট্রের ওই সংস্থার প্রতিনিধিকে বলেন, ‘‘আমরা নদীর লাগোয়া এলাকায় জমি দেবো। আপনারা আসুন। নৌকা গড়ুন।’’
মহারাষ্ট্র, কেরল, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, অসম ও পুদুচেরির বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এ দিনের কনক্লেভে যোগ দেন। ছিলেন এ রাজ্যের অন্তত আটটি সংস্থার কর্তারাও। তাঁদেরই এক জন প্রশ্নোত্তর পর্বে পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান, বজবজ থেকে নামখানার মধ্যে তাঁরা গোটা তিরিশ ‘মেকানাইজড বোট’ বা যন্ত্রনৌকা নামাতে প্রস্তুত। সচিব বলেন, ‘‘জলধারা প্রকল্পে নতুন ভুটভুটির জন্য সরকার এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেবে। নৌকার কাঠামোয় বদল ঘটাতে মালিকেরা যাতে সহজে ঋণ পেতে পারেন, পরিবহণ দফতর সেটা দেখবে।’’
নদী-দুর্ঘটনার জন্য কনক্লেভে উপস্থিত সকলেই অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার দিকে আঙুল তোলেন। সেটা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে নৌকার গ়ড়নের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেন কেরল ও তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিরা। ওড়িশার একটি সংস্থার প্রতিনিধি বলেন, ‘‘নদীপথে যাত্রী নিয়ে জোয়ারের সঙ্গে টেক্কা দিতে নৌকার গড়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। সে-দিকে সরকার নজর দিলে দুর্ঘটনা কমবে।’’ পুদুচেরির প্রতিনিধি বলেন, ‘‘যাঁরা বছরভর নৌকা চালান, তাঁদের প্রশিক্ষণ থাকে না। কিন্তু নিজস্ব একটা শিক্ষা থাকে। বিধিবদ্ধ প্রশিক্ষণই সেই শিক্ষাকে আরও ধারালো করে তুলতে পারে।’’
মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধির পরামর্শ, নৌকা ও ঘাট দুই-ই পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত। সব চেয়ে জরুরি ঘাটের কাছে জ্বালানির ব্যবস্থা করা। এ কথা মেনে নিয়ে পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভুটভুটির কর্মীরা সাধারণত জ্যারিকেনে ডিজেল আনেন। তাতে যে কেরোসিন মেশানো হয় না, জোর দিয়ে কে বলতে পারে?’’ মন্ত্রীও মেনে নেন, সর্বাগ্রে জ্বালানির ব্যবস্থা করা জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো সর্বত্র সিএনজি-চালিত বাস নামাতে চাই। কিন্তু আসানসোল ছাড়া কোথাও ওই জ্বালানি ভরার স্টেশনই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy