বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে বিলম্ব নিয়ে বৃহস্পতিবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে বিলম্ব নিয়ে আবার সরব হলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যপাল ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। অর্থাৎ, এখনও ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ বাকি। বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে এসে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
নিউটাউনের রবীন্দ্র তীর্থে ভাষা মেলার উদ্বোধনে যোগ দিয়েছিলেন ব্রাত্য। সেখান থেকেই উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ হয়ে যাবে। অকারণে বিলম্ব হবে না। কারণ, এই বিলম্বের কোনও অর্থ নেই। এটা করা মানে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টকেই অগ্রাহ্য করা।’’
ব্রাত্য আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ধৈর্য ধরে আছেন। সৌজন্য দেখিয়েছেন। আমরা চাইব, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দ্রুত নিয়োগ হোক এবং অচলাবস্থা পুরোপুরি কেটে যাক। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিছু এখনও বাকি আছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই ধরনের বাধা আমরা যথেষ্ট সহ্য করেছি। এই প্রক্রিয়াকে আর দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়।’’
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে কেন গড়িমসি করছেন রাজ্যপাল, তা নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছিলেন ব্রাত্য। আগামী মাসে সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত শুনানি রয়েছে। সেখানে কি বিলম্বের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হবে? ব্রাত্য বলেন, ‘‘আগামী মাসে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আইনি পরামর্শ নেব। তার পর কী করা যায়, ভাবব।’’
উল্লেখ্য, রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের বিবাদ সর্বজনবিদিত। সেই সংঘাতের জেরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্থায়ী উপাচার্য পদ ফাঁকা। আচার্য তথা রাজ্যপালের ঠিক করে দেওয়া অস্থায়ী উপাচার্যেরাই দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নবান্ন বনাম রাজ্যপালের বিবাদের নিষ্পত্তি করতে গত ৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট ‘সার্চ-কাম-সিলেকশন’ কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল। শীর্ষ আদালত বলেছিল, এই কমিটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের জন্য তিনটি নাম বাছাই করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। নামের আদ্যক্ষরের ভিত্তিতে তালিকায় তিনটি নাম থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী তিন জনের মধ্যে পছন্দের ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি করবেন। সেই নামের তালিকা থেকেই এক জনকে বেছে নেবেন রাজ্যপাল। তবে তা নিয়ে শীর্ষ আদালতে আপত্তি তোলেন বোস। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্যপালের আর্জি খারিজ করা হচ্ছে না। পরে প্রয়োজন মতো তা শোনা হবে। আপাতত আগের নির্দেশ মেনেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে।
৬ ডিসেম্বর, প্রথম পর্যায়ে প্রেসিডেন্সি, বর্ধমান, বাঁকুড়া, কল্যাণী, সিধু-কানহো-বিরসা এবং রানি রাসমণি গ্রিন বিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। তার পর ১০ ডিসেম্বর আরও চার এবং ১১ ডিসেম্বর আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়, মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়, হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ১৭ ডিসেম্বর দার্জিলিং হিল্স বিশ্ববিদ্যালয়, আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy