পশ্চিম মেদিনীপুরের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক থেকে নেওয়া।
প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার অর্থে কেন্দ্রের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিমত, ‘‘আবাস যোজনার টাকা শুধু প্রধানমন্ত্রীর নয়। এটা কেন্দ্র-রাজ্য মিলে করে।’’ অর্থাৎ ওই প্রকল্পে রাজ্যেরও ভূমিকা আছে।
বৃহস্পতিবার মমতার সভা ছিল জঙ্গলমহলে। সেখানে রাজ্য এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কল্যাণে রাজ্য সরকার কী কী করেছেন, তা সভামঞ্চে সবিস্তারে জানিয়েছেন মমতা। তবে একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো যে সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি রাজ্যের মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার অর্থবণ্টন নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। দুঃস্থদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার এই প্রকল্পের টাকা মুখ্যমন্ত্রীর বাংলার বাড়ি প্রকল্পে খরচ হওয়া নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এমনকি, কেন্দ্রীয় দল এসে আবাস যোজনায় বিভিন্ন শর্তের কথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। মমতা এ নিয়ে এর আগেও প্রশ্ন তুলেছিলেন। বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলের সভা থেকেও তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা শুধু প্রধানমন্ত্রীর নয়। এটা কেন্দ্র-রাজ্য মিলে করে। আমাদেরই টাকা জিএসটিতে তুলে নিয়ে যায়। আবার সেই টাকা আমাদেরই দেয় না।’’
গত ১ ফেব্রুয়ারি মমতা বীরভূমের সভা থেকেও আবাস যোজনার তহবিল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কেন্দ্রের প্রকল্পের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেছিলেন, ‘‘আবাসে ঘর পেতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, যাঁর বাড়িতে স্কুটি আছে তাঁকে আবাস প্রকল্পে বাড়ি নয়। বা যাঁর বাড়িতে কেউ চাকরি করেন, তিনিও বাংলায় বাড়ি পাবেন না। তা হলে পাবেটা কে? তোমরা ঠিক করে দেবে?’’ বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলে আবার কেন্দ্রের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা। একই সঙ্গে বাংলার বঞ্চনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনেক গ্রামীণ রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বাংলার বাড়িতে টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে।’’
এ ব্যাপারে রাজ্যের বিজেপি নেতাদেরও কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারাই গিয়ে বলছে টাকা দিলে মানুষ উপকৃত হবে। তা হলে আমরা কী করে ভোট চাইব। আমি বলছি লজ্জা থাকা উচিত। কারণ এগুলো মানুষের টাকা। তোমাদের টাকা নয়। আগে রাজ্য কর সংগ্রহ করত। এখন কেন্দ্র তোলে জিএসটি। জনগণের টাকা নিয়ে দিল্লি নিয়ে যায়। কিন্তু রাজ্য সরকারের যে ভাগ তা দেয় না। ’’
কেন্দ্রের বঞ্চনা প্রসঙ্গে উঠে এসেছে ১০০ দিনের কাজের টাকার কথাও। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে আধার কার্ড লিঙ্ক না করালে টাকা পাওয়া যাবে না। কিন্তু লিঙ্কটা করাবে কোথায়? গ্রামের মানুষ অনলাইনে লিঙ্ক করাবে?’’ মমতার প্রশ্ন, ‘‘কত গ্রামে ব্যাঙ্কই নেই। অনলাইনটা করবে কোথা থেকে? মাথা থেকে? মুণ্ডু থেকে? (প্রধানমন্ত্রী) সেটা একবার দেখবেন না।’’ ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের অনলাইন শর্ত প্রসঙ্গে এরপর মঞ্চ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘‘জীবনটাকেই অনলাইন করে দিচ্ছে মোদী সরকার।’’
বৃহস্পতিবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়েও জঙ্গলমহলের সভা থেকে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রের অসহযোগিতার কারণেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সফল হচ্ছে না। তবে একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি, হাওড়া, হুগলির মতো জেলাতেও প্লাবিত এলাকা গুলির জন্য ২৭০০ কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্পের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy