গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ
সিপিএমের ‘রেড ভলান্টিয়ার’ বাহিনীর মতো এ বার আসছে বিজেপি-র ‘গেরুয়া ভলান্টিয়ার’।
করোনা স্ফীতিতে বন্ধ রাজনৈতিক কর্মসূচি। কিন্তু তা হতে দিয়ে চায় না রাজ্য বিজেপি। এ বার দল তাই একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে দলীয় কর্মীদের নিয়ে ঝাঁপাতে চায় গেরুয়া শিবির। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে এর দায়িত্ব সামলাবে দলের যুব শাখা। সদ্য ঘোষিত বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি হয়েছেন চিকিসক ইন্দ্রনীল খাঁ। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই চিকিৎসকের নেতৃত্বেই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবা দেবে বিজেপি। অন্য দিকে, করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে ওষুধ-সহ অন্যান্য জরুরি সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজও করবেন বিজেপি কর্মীরা। রাজ্য স্তরে সেই দায়িত্বে থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।
২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ শুরুর পরেই এমন স্বেচ্ছাসেবী দল গঠনে উদ্যোগী হয়েছিল সিপিএম। বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হয় ‘রেড ভলান্টিয়ার’ বাহিনী। দলের পক্ষে জানানো হয়েছিল, করোনা রোগীদের পরিষেবা দিতে কাজ করবে এই বাহিনী। এর পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফোন নম্বর দিয়ে প্রচারও শুরু হয়। বলা হয়, দিন হোক বা রাত— যখনই কোনও প্রয়োজন হবে আক্রান্ত বা তাঁদের বাড়ির লোকজন যেন রেড ভলান্টিয়ারদের ফোন করেন। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে বাহিনীর সদস্যেরা সেখানে যাবেন যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে। পরবর্তী কালে ‘রেড ভলান্টিয়ার’-দের অনেক উল্লেখযোগ্য পরিষেবার খবরও প্রকাশ্যে এসেছিল। এ বার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই বাহিনীর পরিকল্পনা করলেও তিনি এখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে দলের অন্য নেতারা পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে শুরু হবে এই পরিষেবা। সে দিন একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এর সূচনা করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। থাকতে পারেন সর্বভারতীয় যুব মোর্চা সভাপতি তেজস্বী সূর্য।
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের পরেই বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা দলীয় কর্মীদের করোনা মোকাবিলায় ‘হেল্থ ভলান্টিয়ার’ হওয়ার ডাক দেন। সেই সময়ে দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে বাংলার প্রায় ২২ হাজার কর্মী সেই সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়াতে মূলত সেই কর্মীদের উপরেই নির্ভর করা হচ্ছে। রাজ্যের সাত পুরনিগম, ১২৫ পুরসভা এবং ৩৪১ ব্লকে আলাদা আলাদা দল তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত স্তরে এবং শহরাঞ্চলে ওয়ার্ড স্তরে একজন করে বিবেক বাহিনী ইনচার্জ থাকবেন।
তবে মূল পরিচালনা হবে রাজ্য স্তরেই। ঠিক হয়েছে রাজ্যস্তরে দু'টি হেল্পলাইন নম্বর থাকবে। একটি করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসার জন্য এবং অপরটি আক্রান্ত গৃহবন্দীদের অন্যান্য সহযোগিতার জন্য। কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করানো দরকার কি না সেটা যেমন বিবেক বাহিনীর সদস্যরা দেখবেন তেমনই বাড়ি বাড়ি ওষুধ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেবেন। রাজ্য বিজেপি এমনটাও ঠিক করেছে যে, দুঃস্থদের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ দেওয়া হবে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবার জন্য কলকাতায় একটি ২৪ ঘণ্টার পরিষেবাও চালু হচ্ছে। রাজ্যে যে কোনও প্রান্ত থেকে যে কোনও সময়ে ফোন করলে চিকিৎসকদের পরামর্শ পাওয়া যাবে। বিজেপি সূত্রে খবর, এর জন্য রাজ্য যুব সভাপতি ইন্দ্রনীলের নেতৃত্বে কমপক্ষে একশো জন চিকিৎসকের একটি প্যানেল তৈরি করা হচ্ছে। বিজেপি-র চিকিৎসক শাখার সব প্রতিনিধিকেই পালা করে এই পরিষেবায় যোগ দিতে হবে বলেও দলের পক্ষে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy