প্রতীকী ছবি।
নানা দেশে বিভিন্ন কাজে যুক্ত প্রবাসী ভারতীয়দের ভোট দেওয়ার জন্য প্রচুর টাকা ও সময় ব্যয় করে দেশে আসতে হয়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের সেই ঝক্কি থেকে রেহাই দেওয়ার উদ্যোগ চলছে। প্রবাসীরা যাতে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারেন, সেই বিষয়ে দিন তেরো আগে আইন মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সে-ক্ষেত্রে প্রবাসীদের ভোট দিতে হবে ‘ইলেক্ট্রনিক্যালি ট্রান্সমিটেড পোস্টাল ব্যালট সিস্টেম’ বা ইটিপিবিএসের মাধ্যমে।
আইনের মন্ত্রকের ছাড়পত্র মিললে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, তামিলনাড়ু, কেরল, পুদুচেরি, অসমের বিধানসভা নির্বাচনেও প্রবাসীরা নিজের নিজের কর্মক্ষেত্রে থেকেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় এ-পর্যন্ত প্রবাসী ভোটার ৪৫ জন। সারা দেশে সংখ্যাটা এক লক্ষের কিছু বেশি। ৬এ আবেদনপত্রের ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারেন প্রবাসীরা। তার পরে দেশে এসে পাসপোর্ট দেখিয়ে সশরীরে বুথে ভোট দিতে পারেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সাড়ে ২৫ হাজার প্রবাসী এ ভাবেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। তার মধ্যে পাঁচশোর কিছু বেশি ভোটার ছাড়া সকলেই ছিলেন কেরলের। এ বার বিধানসভা নির্বাচনে কেরলের ওই ভোটারেরা দেশে ফিরবেন, নাকি প্রবাসে থেকেই ভোট দেবেন— তা নিয়ে চর্চা চলছে।
প্রবাসীরা যাতে কর্মস্থলে থেকেই ভোট দিতে পারেন, তার বন্দোবস্ত চেয়ে কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মহল থেকে আবেদন এসেছে কমিশনের কাছে। তা নিয়ে রিট আবেদনও করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রবাসীদের বক্তব্য, শুধু ভোট দেওয়ার জন্য দেশে ফিরতে অনেক খরচ হয়। নিজেদের কাজকর্মের উপরেও তার প্রভাব পড়ে। তাই পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে ভাল হয়।
আরও পড়ুন: আরএসএস দফতরে ফাইল হাতে প্রাক্তন ডিজি, সাক্ষাৎ ভাগবতের সঙ্গে
আরও পড়ুন: রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ চাকরি, প্রতিশ্রুতি বিজেপির, ‘ভাঁওতা’ বলছে তৃণমূল-বাম-কং
ইটিপিবিএস পদ্ধতিতে এখনভোট দেন সার্ভিস ভোটারেরা। তাঁদের অধিকাংশই সামরিক বা আধা-সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। প্রবাসী ভারতীয়দের ক্ষেত্রে ইটিপিবিএসের বিষয়টি চূড়ান্ত হলে ওই পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারকে নিজের কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করতে হবে। প্রবাসীর কাছে ইলেক্ট্রনিক্যালি ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেবেন রিটার্নিং অফিসার। তা ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট নিয়ে ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন প্রবাসী ভোটার। সেখানকার ভারতীয় দূতাবাসের কূটনীতিকের প্রত্যয়িত ঘোষণাপত্র সেই ব্যালট পেপারের সঙ্গে পাঠাবেন তিনি। সেটি ডাকে, নাকি ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে পাঠাতে হবে— তা অবশ্য এখনও স্থির হয়নি।
তবে প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের বিষয়টি প্রশ্নাতীত নয় বলে মনে করছেন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে একদা যুক্ত থাকা ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের। তাঁদের মতে, এই প্রক্রিয়ায় ভোটের ‘গোপনীয়তা’ প্রশ্নের মুখে পড়বে। এই সব প্রশ্ন, সংশয়ের নিরসন করে কমিশন কয়েক মাসে বাদে অনুষ্ঠেয় পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে প্রবাসী ভারতীয়দের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের নিয়ম চালু করতে পারবে কি না, তার উত্তর ভবিষ্যতের গর্ভে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy