রাস্তা ধসে আটকে গিয়েছে গাড়ি। রিশপ থেকে কালিম্পঙের পথে ছ’মাইল এলাকায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
ক্যালেন্ডারে কার্তিক। কিন্তু বৃষ্টি পিছু ছাড়ছে কই!
বঙ্গ থেকে বর্ষা বিদায় নিয়েছে বটে। তবুও নিম্নচাপের ধাক্কায় মেঘলা আকাশ, বৃষ্টি নিয়েই দিন কাটছে বাঙালির। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের একাংশে মঙ্গলবার তেমন জোরালো বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং তরাইয়ের একাংশ। এ দিন খারাপ আবহাওয়ার কারণে বাগডোগরা থেকে পাঁচটি উড়ান মুখ ঘুরিয়ে চলে আসে কলকাতায়। তার মধ্যে চারটি উড়ানই ছিল দিল্লি থেকে বাগডোগরাগামী। পঞ্চম উড়ানটি কলকাতা থেকে গিয়ে ফিরে আসে।
এই পরিস্থিতিতে আমজনতার অনেকেরই প্রশ্ন, জলবায়ুর বদলের চক্করে হেমন্ত কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তবুও শীত আসার আগে যেটুকু হেমন্তের গন্ধ মিলত, তা-ও কি মিলবে না এ বার?
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ, বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে। উত্তরবঙ্গের তরাইয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে। গাঙ্গেয় বঙ্গের দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দু-এক জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি বঙ্গ ছাড়িয়ে বিহারের উপরে চলে গিয়েছে। কিন্তু তার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়া ঢুকছে। তার প্রভাবেই এমন বৃষ্টি। তবে আগামিকাল, বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আশাও করছেন অনেকে।
সপ্তাহ খানেক আগেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে উত্তুরে হাওয়া জোরালো ভাবে বইছিল। তার ধাক্কায় তড়িঘড়ি পাততাড়ি গোটায় বর্ষা। প্রশ্ন উঠেছে, এই বৃষ্টি কমলেই কি সেই উত্তুরে হাওয়ার ধাক্কায় হেমন্ত হাজির হবে? আবহবিদদের একাংশের মতে, এক দিকে সাগরের জোলো হাওয়া ঢুকছে, অন্য দিকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ধাক্কায় উত্তর ভারতে জোরালো বৃষ্টি হচ্ছে। এই দুয়ের প্রভাবেই উত্তুরে হাওয়া বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে।
বৃষ্টি থামলেই উত্তুরে হাওয়ার পথ পরিষ্কার হবে, এমন কথা মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা বলছেন না। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামী দিন পাঁচেকের মধ্যে তেমন পারদ পতন হবে না। কারণ, আপাতত তিন দিন উত্তর ভারত শুষ্ক থাকলেও ফের একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আছড়ে পড়তে চলেছে। তার ফলে ফের উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টি এবং তুষারপাত হবে। এই পূর্বাভাসের উপরে ভিত্তি করেই আবহবিদদের অনেকে মনে করছেন, আগামী দফার তুষারপাত হলেই ফের পথ খুলবে উত্তুরে বাতাসের। বরফের উপর দিয়ে বয়ে আসা উত্তুরে বাতাসের হিমেল ছোঁয়া এসে পৌঁছতে পারে নদীমাতৃক বঙ্গদেশেও। সেই হিসেবে কালীপুজোর আগে হেমন্তের ঘ্রাণ মিলতে পারে বাংলায়।
তবে অনেকে এ-ও বলছেন, প্রকৃতি যা খামখেয়ালি হয়ে উঠেছে তাতে এত আগে থেকে নিশ্চিত ভাবে বলা মুশকিল। তাই এত হিসাবের মাঝে প্রশ্ন থেকেই যায়, সত্যিই হেমন্তের আঘ্রাণ মিলবে কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy