ফাঁকা রাস্তায় পুলিশের ব্যারিকেড। নিজস্ব চিত্র।
নবান্ন থেকে কার্যত লকডাউনের ঘোষণার সময় রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙার জন্যই এই কড়াকড়ি। সরকার আশা করছে, মানুষ এই নির্দেশ মানবেন। রবিবার, লকডাউনের প্রথম সকালে হুগলি থেকে হাওড়া হয়ে কলকাতা আসার সময় সেই ছবিটাই ধরা পড়ল। সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজার, দোকান খোলা থাকলেও রাস্তায় লোক নেই বললেই চলে। বাজার এলাকায় দু’এক জায়গায় অল্প কয়েক জনের জমায়েত ছাড়া মোটের উপর ফাঁকা রাস্তা। গাড়ি চলাচলও খুব কম। রাস্তায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নাকা চেকিং চলছে। বিধিনিষেধ বজায় রাখতে সক্রিয় পুলিশ।
সকাল ৭টা নাগাদ বালি খালের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ভিড় নেই। তার পর থেকে গাড়ি এগোলেও ছবিটা কিন্তু খুব একটা পাল্টায়নি। রাস্তার ধারে বিক্রেতারা ফল, সবজি নিয়ে বসেছেন। কিন্তু ক্রেতার দেখা বিশেষ একটা চোখে পড়ল না। পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকানগুলো বেশির ভাগ বন্ধ থাকায় সেখানেও ভিড় নেই। গাড়ি যে চলছে না বা রাস্তায় লোক নেই তা নয়, তবে সবটাই হতে গোনা।
কিছুটা এগিয়ে বেলুড়ের রঙ্গোলি শপিং মলের সামনে ছবিটা অবশ্য খানিকটা আলাদা। সেখানে কয়েকটি সবজি ও মুদিখানার দোকানের সামনে ১০-১৫ জনের ভিড়। কয়েকটি রিকশাওয়ালাও দাঁড়িয়ে রয়েছেন যাত্রীর আশায়। সামান্য জটলা হলেও সংবাদমাধ্যমের গাড়ি দেখে অনেকেই সতর্ক হয়ে এ দিক ও দিক হাঁটা লাগালেন। তবে তার পরে আবার অভ্যস্ত ছবির একেবারে উল্টোটাই চোখে পড়ল। প্রায় ফাঁকা রাস্তা ধরেই এগিয়ে চলল গাড়ি।
বেলুড় থেকে সালকিয়া হয়ে হাওড়া স্টেশনের দিকে যাওয়ার পথে দেখা গেল রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ কিছু মোড়ে নাকা চেকিং চলছে। গোলাবাড়ি থানার কাছে একটি নাকা চেকিংয়ে প্রতিটি গাড়িকে জিজ্ঞাসা করে পর্যাপ্ত কারণ থাকলে তবেই তাঁদের যেতে দেওয়া হচ্ছে। নইলে গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা। একই ছবি হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখেও। সেখানে চেকিং আরও কড়া। ব্রিজের দুই প্রান্তেই চেকিং চলছে। সংবাদমাধ্যমের গাড়িকে না আটকালেও বেশ কিছু গাড়ি ও মোটরবাইককে ফিরিয়ে দিলেন পুলিশ কর্মীরা। পর্যাপ্ত কারণ থাকলে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে গাড়ি।
রবিবারের সকালে শুনশান বড়বাজার এলাকাও। রাস্তার উপরেই কিছু ঠেলাগাড়িতে সবজি, ফল বিক্রি হচ্ছে। তবে সেখানেও ক্রেতার সংখ্যা বেশ কম। দোকান প্রায় সবই বন্ধ। রাস্তার ধারে সার দিয়ে দাঁড়ানো ট্যাক্সি, ওলা, উবর। এই সুযোগে কেউ কেউ আবার গাড়ি ধুয়ে নিচ্ছেন। চারদিকে যেন একটা ছুটির আমেজ চোখে পড়ছে। বড়বাজার পেরিয়ে মহাকরণ, লালবাজার চত্বরেও রাস্তাঘাট ফাঁকা। কিছু গাড়ি চললেও কলকাতার সেই চেনা ভিড়ের ছবিটা উধাও।
সব মিলিয়ে লকডাউনের প্রথম সকালের প্রথম ঘণ্টার ছবিটা কিন্তু বেশ স্বস্তির। করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে সরকারের সিদ্ধান্তকে সাদরে গ্রহণ করেছেন সাধারণ মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy