(বাঁ দিকে) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুরের সমাবর্তন নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য। এ বার সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে অনিশ্চয়তা খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সিদ্ধান্তকে ঘিরেও! সমাবর্তন নিয়ে রাজ্যের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার নেই। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ সমাবর্তন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না জানিয়ে সেই অনুষ্ঠানে সায় দেয়নি রাজ্য। এ বার সমাবর্তন নিয়ে অসম্মতির ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যপাল। যদিও বোসের যুক্তি অন্য।
প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর দিনটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য ধার্য রয়েছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগে ‘কোর্ট’ বৈঠক করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সমাবর্তন নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেখানেই। কিন্তু এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোর্ট বৈঠকের অনুমতি চাওয়া হলেও রাজ্যপাল তা দেননি। কোর্ট বৈঠক না হলে সমাবর্তন হওয়াও সম্ভব নয়। ফলে সমাবর্তনের ভাগ্য ঝুলেই রইল। রাজভবন সূত্রে খবর, যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল। আর সেই কারণেই তিনি সমাবর্তন নিয়ে বৈঠকের অনুমতি দেননি।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর রাজ্যপালের নির্দেশ ছিল, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে তাঁদের। কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর হয়নি। বেকসুর খালাস না পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং হস্টেলে ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর কোনও পদক্ষেপ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে করা হয়নি। আর সেই কারণেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে রাজ্যপাল বোস এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি বলে রাজভবন সূত্রে খবর। রাজভবন সূত্রে এ-ও খবর, যত ক্ষণ না বিশ্ববিদ্যালয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবেন, তত দিন তিনি কোর্ট বৈঠকে বসার অনুমতি দেবেন না রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পরে পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের কী কী দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা লেখা ছিল ওই রিপোর্টে। কিন্তু পরে রিপোর্টটি নিয়ে অনেক টালবাহানা হয়। রিপোর্ট পাঠানো হয় অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিতে। কিন্তু অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিও এই রিপোর্ট নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত আসতে পারেনি। মঙ্গলবার আবার অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকের পরই বোঝা যাবে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ভাগ্য আর কত দিন ঝুলে থাকবে।
অন্য দিকে, সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে বৈধ সমাবর্তনের মাধ্যমে বৈধ ডিগ্রি, শংসাপত্র দেওয়ার বিষয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ করতে হবে। সেই সঙ্গে হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যথায় ১৪ ডিসেম্বর বিচারের নিষ্পত্তির দাবিতে ১২ ঘণ্টা অবস্থানে বসতে বাধ্য হবে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy