স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বাস নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু ভাড়া না বাড়ালে বাস নামাবে না বলে জানিয়েছিল অনেক বাস মালিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণে দেখা গেল একই ছবি। কোচবিহার, চুঁচুড়া, বর্ধমান থেকে দুর্গাপুর, আসানসোল সব জায়গায় অল্প বাস চলাচল করল। তার ফলে সমস্যায় পড়লেন সেই যাত্রীরাই।
চুঁচুড়া বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় ৪০০ বাস চলে বিভিন্ন রুটে। কিন্তু বৃহস্পতিবার নাম মাত্র বাস রাস্তায় চলছে। ৮, ১৭, ১৮ ও ২৩ নম্বর রুটের বাস বন্ধ রয়েছে। লোকসান হলে বাস বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ২ নম্বর রুটের বাস মালিক দেবব্রত ভৌমিক। হুগলি বাস শ্রমিক সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক সুদর্শন বসু বলেন, ‘‘এই করোনার সময় যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, বাস শ্রমিকদের প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা করে ভাতা ও মুদিখানার সামগ্রী চালু করতে হবে। রাস্তায় অসংখ্য অটো, টোটো চলার প্রভাব পড়েছে বাস পরিষেবাতে।’’
কোচবিহারে অল্প বাস চলছে দিনহাটা, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ মহকুমা রুটে। কোচবিহার-শিলিগুড়ি রুটে বেসরকারি বাস পরিষেবা একেবারেই বন্ধ। যাত্রী সংখ্যাও নিতান্তই কম। বাস চালক রহিম আলি বলেন, ‘‘সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী আমরা রাস্তায় বাস নামিয়েছি। কিন্তু যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম। এতে খরচের টাকা উঠছে না।’’
কোচবিহার শহর থেকে মাথাভাঙা, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ মহকুমার রুটে প্রতিদিন প্রায় ১০০টি বাস চলাচল করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার এ সব রুটে চার থেকে পাঁচটি বাস চলাচল করছে। কোচবিহার-শিলিগুড়ি রুটের বাস মালিক বাপি সাহা বলেন, ‘‘দূরপাল্লার বাসে ২১ জন করে যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করলে খরচের টাকা উঠবে না। তেলের দাম ও অন্যান্য খরচ যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, অবিলম্বে বাস ভাড়া বৃদ্ধি না করলে আমাদের পক্ষে বাস চালানো সম্ভব নয়।’’
বর্ধমান শহরে চলছে না টাউন সার্ভিস বাস। কয়েকটি বাস চলছে। যার বেশির ভাগ আরামবাগ রোডের। ভুবন ঘোষ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘‘সকাল থেকেই বাস কম চলছে। আশায় ছিলাম আজ থেকে বাস চলবে। এখন কী ভাবে গন্তব্যে যাব ভেবেই পাচ্ছি না।’’
পূর্ব বর্ধমানের মেমারি বাস স্ট্যাণ্ড থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত মাত্র তিনটি বাস ছেড়েছে। তাতে যাত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১২ জন। নবদ্বীপ, আসানসোল, কাটোয়া, মালডাঙা-সহ বিভিন্ন রুটের বাসের চাকা যাত্রীর অভাবে গড়ায়নি। কয়েকটি বাস চলাচল করলেও বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। মাঝের গ্রাম থেকে আসা এক যাত্রী জানান, মাঝের গ্রাম থেকে মেমারির ভাড়া ১৫ টাকা। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
একই ছবি দুর্গাপুর, আসানসোলেও। সেখানে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস চললেও দেখা নেই বেসরকারি বাসের। দুর্গাপুরের সমস্ত মিনিবাস বন্ধ রয়েছে। আগামী শনিবার বৈঠক হবে মিনিবাস সংগঠনগুলির। তারপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে দূরপাল্লার গুটি কয়েক বাস রাস্তায় বের হয়েছে। বেসরকারি বাসের মালিক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘যে ভাবে ডিজেল, যন্ত্রাংশের দাম ও অন্যান্য খরচ বেড়েছে, তাতে এই ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয়। প্রশাসন ও রাজ্য সরকার সব দিক বিচার বিবেচনা করে একটা সিদ্ধান্তে না এলে বাস চলাচল সম্ভব নয়।’’
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট বাস স্ট্যান্ডে দেখা গেল, বাস চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। এক পরিবহন কর্মী জানান, তেলের দাম প্রচুর। বাস ভাড়া না বাড়ালে পুরনো ভাড়াতে গাড়ি চালানো যাবে না। তিনি জানান, এই ভাড়ায় শ্রমিকদের বেতন হবে না। এই ভাড়াতে গাড়ি চালালে বাস মালিকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই তিনি ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy