সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাধ্যতামূলক না হলেও ট্রেকিং-এ যেতে হলে সুরক্ষার স্বার্থে রেজিস্ট্রেশন করানো রীতি। নানা কারণে অনেকেই সেই পদ্ধতিকে তেমন আমল দেন না। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, উত্তরাখণ্ডের ঘটনাই তা চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন পেশাদার অভিযাত্রীদের অনেকে।
রবিবার উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর প্রশাসন জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মোট ৪২ জনকে উদ্ধার করা হলেও প্রীতম রায়, সাগর দে, চন্দ্রশেখর দাস এবং সরিৎশেখর দাসের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। সেই প্রশাসন আরও জানাচ্ছে, সংশ্লিষ্টদের রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে উদ্ধারকাজে প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এ দিনও মেঘলা আবহাওয়ার কারণে তাঁদের খোঁজে হেলিকপ্টার তল্লাশি চালানো সম্ভব হয়নি। তবুও উদ্ধারকারী একটি দলকে পাঠানো হয়েছে। কাঠালিয়া থেকে এ দিন দলটি হেঁটে খোঁজ চালাচ্ছে। ওই দলে চারজন পোর্টার এবং ৯ জন রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মী রয়েছেন।
কী এই রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি?
অভিজ্ঞ অভিযাত্রীরা জানাচ্ছেন, পর্বতারোহণ বা ট্রেকিংয়ে যেতে হলে নিজের এবং গন্তব্য রাজ্যের প্রশাসনকে জানাতে হয় সেই তথ্য। জানাতে হয় অভিযাত্রী দলে কতজন রয়েছেন, তাঁদের নাম, ঠিকানা, বয়স ইত্যাদি। সেই সঙ্গে কবে, কোথায় এবং কতদিনের জন্য তাঁরা পর্বতারোহণ বা ট্রেকিংয়ে যাচ্ছেন, তার তথ্যও দেওয়াও খুব জরুরি। অভিযানের রুট বা কোন কোন জায়গা দিয়ে অভিযাত্রীরা কবে কবে যাবেন, তার সবিস্তার তথ্য দেওয়াই রীতি। সে ক্ষেত্রে কখনও কোনও বিপদ বা দুর্ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সেই অভিযাত্রী দলের অবস্থানের অনুমান করে উদ্ধারকাজ চালাতে পারে। অভিজ্ঞ অভিযাত্রীদের অনেকে এ-ও জানাচ্ছেন, ট্রেকিংয়ের যাত্রাপথে পঞ্চায়েত বা কোনও লোকালয়ে তথ্য জানানোর সুযোগ থাকলে সেখানেও নিজেদের গন্তব্য সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে যাওয়া ভাল। এ রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস ফাউন্ডেশন রয়েছে। সেখানে এই তথ্য জানিয়ে গেলেও চলে। এমন তথ্য জানানোর জন্য কোনও সরকারকেই কোনও টাকা দিতে হয় না। তবুও বহু ক্ষেত্রেই তথ্য না জানিয়ে অভিযানের সংখ্যাবৃদ্ধিতে আশঙ্কাপ্রকাশ করছেন অনেকেই।
এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহী মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, নথিবদ্ধ সংস্থার থেকে পর্বতারোহণ বা ট্রেকিংয়ে গেলে সমস্যা নেই। কারণ, সমস্যা হলে সেই সংস্থাই প্রয়োজনীয় তথ্য জানাতে প্রস্তুত থাকে। কিন্তু ব্যক্তিগত উদ্যোগে বা দলবদ্ধ হয়ে কোনও পরিকল্পনা করা হলে তথ্য জানানো বিশেষ ভাবে জরুরি। মলয়বাবুর কথায়, “এটা সুরক্ষার প্রশ্ন। আবহাওয়া ভাল থাকলে নির্বিঘ্নে অভিযান হতে পারে। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা বেশ মুশকিল। ফলে প্রশাসনের কাছে অভিযাত্রীদের বিবরণ এবং যাত্রাপথের পূর্ণাঙ্গ তথ্য থাকলে উদ্ধার কাজে অনেক সুবিধা হয় এবং সময় কম লাগে।”
তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন ট্রেকিংয়ের শখ নিয়েও আশঙ্কাপ্রকাশ করছেন অভিজ্ঞ পর্বতারোহীদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, ট্রেকিং বা পর্বতারোহণে বিশেষ প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি। বিশেষ করে সমস্যায় পড়লে তার সঙ্গে মোকাবিলা কী ভাবে করতে হবে, সেই ধারণা থাকাটা দরকার। শারীরিক ভাবে সক্ষম থাকলেই অনেকে রোমাঞ্চের খোঁজে ট্রেকিংয়ে বেরিয়ে পড়তে চান। কিন্তু তার আগে খারাপ দিকগুলি সম্পর্কে সবিস্তার জেনে নেওয়াটাই জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy