উঠছে সন্তান বিক্রির অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র।
সন্তানকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছিলেন প্রেমিক। নিজের এবং পরিবারের ‘সম্মান’ বাঁচাতে সেই সন্তানকে নাম ভাঁড়িয়ে জন্ম দেওয়ার পর অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতালে।
সূত্রের খবর, স্বামীর অত্যাচারে তিন সন্তানকে নিয়ে কয়েক বছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে মেমারির মোগরা হাটতলাতে বাপের বাড়ি ফিরে আসার পর এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল রিয়ার (নাম পরিবর্তিত)। সেই সম্পর্কের জেরে আবার সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু ওই যুবক সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। গর্ভপাতের পরামর্শও দেন বলে দাবি। কিন্তু রিয়া এই প্রস্তাবে রাজি হননি। ‘‘সন্তান জন্মের পর দরকার পড়লে অন্য কাউকে দিয়ে দেব। কিন্তু নষ্ট করতে পারব না,’’— প্রেমিককে এমনটাই জানিয়েছিলেন রিয়া। তাই শনিবার নিজের নাম গোপন করে কালনা মহকুমা হাসপাতাল ভর্তি হন তিনি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জন্ম দেন এক পুত্র সন্তানের। কিন্তু বিপত্তির শুরু তার পর। জানা যায়, সদ্যোজাতকে মায়ের কাছে দেওয়ার আগেই তাঁর পিতৃপরিচয় জানতে চান নার্সরা। কিন্তু রিয়া এক নাম বলেন। হাসপাতালের খাতায় নথিভুক্ত নাম ছিল অন্য। এতেই সন্দেহ হয় নার্সদের। তাঁরা বিষয়টি জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এর পর রিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সামনে আসে সত্য।
রিয়া জানান, তাঁর তিনটি সন্তান থাকার কারণেই আর এই সন্তানটি নিজের কাছে রাখতে চাননি। তাই শিশুটিকে তার পরিচিত নিঃসন্তান এক মহিলার হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। পরে যাতে কোনও আইনি সমস্যা না হয়, তাই ওই নিঃসন্তান মহিলার নামেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন!
এর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রিয়াকে আটক করে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘‘এক প্রসূতির সন্তান জন্ম হওয়ার পরে দেখা গিয়েছে ওই প্রসূতি অন্যের নামে ভর্তি হয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’
অন্য দিকে, নিঃসন্তান ওই মহিলার শাশুড়ির দাবি, শিশু কেনা বা বিক্রির মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। বৌমার কোনও সন্তান নেই বলে রিয়া তাঁর সদ্যোজাত সন্তান তাঁকে দেবেন বলেছিলেন। পুলিশ অবশ্য এই বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিতে নারাজ। তারা দেখছে সদ্যোজাতকে বিক্রির ছক কষেই ওই প্রসূতি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy