উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের কাউন্সেলিংয়ের লাইন। সল্টলেকে এসএসসির নতুন ভবনের সামনে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
গত ন’বছর ধরে তিলে তিলে সহ্য করতে হয়েছে অপেক্ষার যন্ত্রণা। রাস্তায় নেমে চলেছে লড়াই। চাকরির দাবিতে ধর্না মঞ্চে কেটেছে দিনের পর দিন।
চাকরি নয়, সোমবার চাকরির সম্মতিপত্র হাতে নিয়েই তাই উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল মুখ। তাঁরা জানেন, আরও অনেকটা পথ পেরিয়ে তবে চাকরি পাবেন। তবু, তাঁদের মতে, শুরুটা তো হল!
সোমবার থেকে শুরু হল উচ্চ প্রাথমিকের চাকরির কাউন্সেলিং। সল্টলেকের করুণাময়ীর স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির নতুন ভবনের সামনে ভোর থেকে জমতে শুরু করে চাকরিপ্রার্থীদের ভিড়। তাঁরাই জানিয়েছেন, উচ্চ প্রাথমিকের এই চাকরির বিজ্ঞপ্তি বেরোয় ২০১৪ সালে। দীর্ঘ ন’বছর লড়াইয়ের পরে এত দিনে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে স্কুল নির্বাচন করার সুযোগ পেলেন তাঁরা। মুখেচোখে জয়ের ছবি।
তবে এসএসসি আগেই জানিয়ে দিয়েছে, বিষয়টি বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশে তাই কাউন্সেলিং হলেও এখনই সুপারিশপত্র পাওয়া যাবে না। আদালত নির্দেশ দিলে তার পরে তাঁরা সুপারিশপত্র পাবেন। শেষ ধাপে থাকবে নিয়োগপত্র। তখন বলা যাবে, চাকরি হয়েছে।
সোমবার সকাল ন’টা থেকে কাউন্সেলিং শুরুর কথা থাকলেও অনেক আগে থেকেই এসএসসি-র সামনে ভিড় জমতে থাকে। এক বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে চাকরিপ্রার্থী সারফা খাতুন মালদহ থেকে এসেছেন। সঙ্গে স্বামী এবং সাত বছরের ছেলে। সারফার স্বামী মহম্মদ আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘ধর্না মঞ্চে আমার স্ত্রীর দিনের পর দিন কেটে গেল। এখনও তো নিয়োগ হল না।’’ উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থেকে আসা আর এক চাকরিপ্রার্থী মহম্মদ আবদুল আজিজ কাউন্সেলিং শেষে স্কুল নির্বাচন করে সম্মতিপত্র নিয়ে বলেন, ‘‘এত দিন পরে স্কুল নির্বাচন করতে পারলাম।’’
মহাশ্বেতা পাঠক নামে এক চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, তিনি যখন আবেদন করেছিলেন, তখন তাঁর বয়স নির্ধারিত সীমার মধ্যেই ছিল। অথচ নথি যাচাইয়ের সময়ে দেখা যায় নির্ধারিত সীমা পেরিয়ে গিয়েছে বয়স। তাই তাঁর কাউন্সেলিং বাতিল হয়েছে। মহাশ্বেতা এখন হুগলির একটি স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক। বলেন, ‘‘আমি ২০১১ সালে টেট পাশ করেছি। ইন্টারভিউও দিয়েছি। তা হলে কাউন্সেলিংয়ে কেন বাদ পড়ব?’’ এসএসসি জানিয়েছে, নিয়ম মাফিকই তাঁর কাউন্সেলিং বাতিল হয়েছে।
এ দিন ছিল আরবি, উর্দু এবং ইংরেজি ও হিন্দি মাধ্যমে বিজ্ঞান স্কুলের শিক্ষকদের কাউন্সেলিং। কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, ‘‘এ দিন ৩০৩ জনের কাউন্সেলিং হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে অনুপস্থিত, সম্মতিপত্র নেননি, নথি যাচাইয়ের সময় বাতিল হয়েছে এমন মোট ৩৫ জন ছিলেন। মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন ৭০০ জনের মতো চাকরিপ্রার্থীর কাউন্সেলিং হওয়ার কথা।’’ এ দিকে এ দিন কমিশনের অফিসের কাছে উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা হেল্প ডেস্ক খুলেও বসেছিলেন। চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘যত দিন এই কাউন্সেলিং চলবে, চাকরিপ্রার্থীদের সুবিধার জন্য তত দিন হেল্প ডেস্ক চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy