শিলিগুড়িতে মোর্চা সমর্থকদের খুকরি মিছিল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
উত্তাপের ভরকেন্দ্র এ বার মিরিক। মঙ্গলবার দিনভর তুমুল অশান্তি, আগুন, ভাঙচুরের সাক্ষী হতে হল পাহাড়ের সবচেয়ে ছোট পুর এলাকাটিকে। মাসখানেক আগের পুর নির্বাচনে মোর্চার হাতছাড়া হয়েছিল যে পাহাড়ি শহর, সেই মিরিকের পুর ভবনে এ দিন আগুন লাগিয়ে দিল বিমল গুরুঙ্গের সাঙ্গোপাঙ্গোরা। আন্দোলনের আঁচ নেমে এল সমতলেও। শিলিগুড়িতেও এ দিন খুকরি-মিছিল করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
সোমবার রাতে মিরিকে পুলিশের গুলিতে আশিস তামাঙ্গ নামে এক মোর্চা সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ মোর্চার। আজ দিনভর তা নিয়েই উত্তাল ছিল মিরিক। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, “পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যায়নি। মিরিকে যে ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছিল, গুন্ডামি করা হচ্ছিল, ভাঙচুর করা হচ্ছিল, সেটা কোনও সভ্য দেশের সরকার সহ্য করতে পারে না। পুলিশ সংযত আচরণ করছে। গুলি চালাচ্ছে না।” তৃণমূলের তরফে বরং পাল্টা অভিযোগ, সোমবার রাতে নবরাজ তামাঙ্গ নামে এক তৃণমূল কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে মোর্চা আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মিরিকের ওই তৃণমূল কর্মীকে রাতেই শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
রোগী খুনের অভিযোগে গ্রেফতার চিকিত্সক
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আনা হল মোর্চা সমর্থক আশিস তামাঙ্গের দেহ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
আজ, মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি অশান্তি হয়েছে মিরিক পুর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাইয়ের ওয়ার্ড সেটি। তৃণমূল পরিচালিত মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান এবং অন্য তৃণমূল কাউন্সিলরদেরকে বেশ কিছু দিন ধরেই পদত্যাগ করতে চাপ দিচ্ছে মোর্চা। রাস্তাঘাটে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে, তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ চলছে বলেও অভিযোগ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত চেয়ারম্যান বা অন্য কাউন্সিলররা পদত্যাগ করেননি। এ দিন তাই চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডেই মোর্চা সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিতে চেয়েছিল বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবি। গোলমাল ছড়িয়ে পড়ে মিরিক বাজারে। আগুন লাগানো হয় পুর ভবনে। মিরিকের ভূমি রাজস্ব অফিসেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার রাতেই মিরিকে সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার দিনভর থমথমে ছিল মিরিক। এলাকায় সেনা টহল চলছে। পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy