Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Women Harassment

নারী সুরক্ষা: কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিশানায় রাজ্য

রাজ্য সরকার যখন নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলছে, তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রের টাকা পাওয়া সত্ত্বেও রাজ্য মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে পদক্ষেপ করছে না।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:২৬
Share: Save:

মহিলাদের নিরাপত্তায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প রূপায়ণ করছে না বলে অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী। রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেস যখন নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, রাজ্যের পাওনা টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলছে, তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রের টাকা পাওয়া সত্ত্বেও রাজ্য মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে পদক্ষেপ করছে না। প্রত্যাশিত ভাবেই, কেন্দ্রের এই অভিযোগ মানতে চায়নি রাজ্য।

আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী সংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে ৪৯ হাজার ৫৮০টি ধর্ষণ ও পকসো মামলা বকেয়া রয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার ধর্ষণ ও পকসো মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ১১টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট চালু করার বিষয়ে পদক্ষেপ করেনি। ২০২২-এর ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’-র রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় পশ্চিমবঙ্গে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ৮.৯ শতাংশ। যা চিন্তাজনক ভাবে কম। পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অপরাধের ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৩৩০টি মামলা ঝুলে রয়েছে। যা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। মোট মামলার মধ্যে ২.৫ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ৯৭.৫ শতাংশ ঝুলে রয়েছে। এই হারও দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

আর জি কর-কাণ্ডের পরে গত ২২ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ধর্ষণের ঘটনার মোকাবিলায় কঠোর আইন, কড়া শাস্তি ও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট চালুর দাবি জানিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্য, ধর্ষণ ও শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন রোখার আইন পকসো মামলায় ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্ট তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প রয়েছে। যাতে কেন্দ্র ৬০ শতাংশ খরচ দেয়। পশ্চিমবঙ্গের জন্য মোট ১২৩টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে ২০টি বিশেষ পকসো কোর্ট। বাকি ১০৩টি ধর্ষণ ও পকসো মামলার কোর্ট। কিন্তু রাজ্য সরকার ২০২৩-এর জুন পর্যন্ত কোনও কোর্ট চালু করেনি। তার পরে রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে চিঠি লিখে এই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে ৭টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট চালু করার কথা জানায়। সংশোধিত হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের জন্য ১৭টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট বরাদ্দ হয়। যার মধ্যে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৬টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট চালু হয়েছে। ১১টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিষয়ে রাজ্য সরকার এখনও পদক্ষেপ করেনি। অন্নপূর্ণা দেবী বলেন, কেন্দ্রের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও রাজ্য সরকার মহিলা হেল্পলাইন (১৮১ নম্বর) চালু করেনি। নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক ভিডিয়ো কনফারেন্স করে, টেলিফোনে বার বার রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছে। মুখ্যসচিবকে চিঠিও লেখা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।

অভিযোগ নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, এর আগে এ বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগের চিঠি চালাচালি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রের তোলা এই সংক্রান্ত অভিযোগ খারিজ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যে অনেক ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট ও পকসো আদালত তৈরি করা হয়েছে। তা হয়েছে রাজ্য নিজস্ব তহবিল থেকেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Women Harassment Women Safety West Bengal government Central Government Women Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy