শুধু হাইটেনশন তার নয়। এ বার থেকে জেলার যে সমস্ত সরকারি ভবনে মুখ্যমন্ত্রী থাকেন, সেখানে মাটির নীচ দিয়ে কেবল লাইনেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। জলপাইগুড়ির গরুমারায় জঙ্গল ঘেরা টিলাবাড়ি রিসর্টে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় একাধিক বার লোডশেডিং হয়। এ নিয়ে জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি বিদ্যুৎ দফতরের নজরদারি ও কর্মীদের কাজের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে দুই কর্তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়। জলপাইগুড়ির রিজিওনাল ম্যানেজারকে বদলি করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে খলনায়ক হিসেবে উঠে এসেছে একটি পাখি। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে তারের উপর বসে পাখি ডানা ঝাপটানোর ফলে বিপত্তি ঘটে। তার সঙ্গে ধরা পড়েছে অন্যান্য সমস্যাও। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল’ বা মাটির তলা গিয়ে কেবল লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। এই ব্যবস্থা শুধু মাত্র মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সীমাবদ্ধ না রেখে সার্বিক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায় কি? সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য দফতর থেকে পাওয়া যায়নি।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী সফরে গেলে কোথায় রাত্রিবাস করেন এবং সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকাঠামো ও ব্যবস্থা কী আছে, তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দ্রুত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। রিপোর্ট তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন প্রতিটি জেলার রিজিওনাল ম্যানেজার। গত পাঁচ-ছয় বছরে জেলায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে সমস্ত জায়গায় থেকেছেন, এমন প্রতিটি ভবন বা রিসর্টকেই চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। মূলত সেই সমস্ত রিসর্টগুলিতেই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে মাটির নীচ দিয়ে কেবল লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা রাখার ভাবনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, এই কাজে খরচ বেশি হলেও মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার খাতিরেই এমন ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন বিদ্যুৎ কর্তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাটির নীচ দিয়ে কেবল লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ গেলে, ঝড়-বৃষ্টি-পাখি-গাছের ডাল বা বাইরের অন্য কোনও জিনিস তারের উপর পড়তে পারবে না, ফলে বিভ্রাটও হবে না। এক বিশেষজ্ঞ জানান, বিদেশে একটি ‘চ্যানেল’ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবার লাইন পাশাপাশি রাখা হয়। এই ব্যবস্থায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সহজ হয় বলে তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy