Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
JU Student Death

যাদবপুর-রিপোর্টে ইউজিসি ‘অসন্তুষ্ট’, ১২ প্রশ্নের জবাব তলব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, নইলে ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আগে দাবি করা হয়েছিল, তাদের পাঠানো রিপোর্টে ‘সন্তুষ্ট’ ইউজিসি। বৃহস্পতিবার জানা গেল, ওই রিপোর্ট নিয়েই ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করে ফের জবাব তলব করা হয়েছে কমিশনের তরফে।

image of letter sent by UGC

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে জবাব তলব ইউজিসির। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ১৫:০০
Share: Save:

পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু প্রসঙ্গে যে রিপোর্ট যাদবপুর কর্তৃপক্ষ পাঠিয়েছিলেন, তাতে এ বার ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত রবিবারই এ প্রসঙ্গে একটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। যাদবপুর কর্তৃপক্ষ সোমবার সেই রিপোর্ট পাঠানোর পর দাবি করেছিলেন, তাঁদের পাঠানো তথ্যে ‘সন্তুষ্ট’ ইউজিসি। জানানো হয়, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির প্রতিনিধি দল আসার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয় সেই ‘সন্তুষ্টি’র কারণেই। তবে বৃহস্পতিবার ফের যাদবপুর কর্তৃপক্ষের কাছে ১২টি প্রশ্নের জবাব-সহ বিভিন্ন তথ্য চেয়ে পাঠিয়ে ইউজিসি জানিয়ে দিয়েছে, আগের পাঠানো রিপোর্টে তারা মোটেও ‘সন্তুষ্ট’ নয়। এই প্রশ্নগুলির জবাব, তথ্য-সহ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে হবে। নইলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে কমিশন।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে লেখা এক চিঠিতে ইউজিসি জানিয়েছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিংয়ে লাগাম পরাতে ২০০৯ সালে কমিশন কিছু নীতি চালু করেছে। সেই নীতির শর্তগুলি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেনেছেন কি না, সে সবই জানতে চাওয়া হয়েছে।

যাদবপুর কর্তৃপক্ষের কাছে কী কী জানতে চাওয়া হয়েছে ইউজিসির তরফে, কোন কোন তথ্যই বা জানাতে হবে—

১. ভর্তির সময়ে ছাত্রদের যে ‘ব্রোশিওর’ দেওয়া হয়েছিল, তাতে কি র‌্যাগিং-বিরোধী হেল্পলাইন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং-বিরোধী সংগঠনের নম্বর রয়েছে? সেই ‘ব্রোশিওর’ পাঠাতে হবে।

২. র‌্যাগিং-বিরোধী হেল্পলাইন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান, ওয়ার্ডেন, র‌্যাগিং-বিরোধী কমিটি, পুলিশের নম্বর লেখা ‘লিফলেট’ বিলি করা হয়েছিল নতুন ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের? সেই ‘লিফলেট’ পাঠাতে হবে।

৩. র‌্যাগিং প্রতিরোধের জন্য যে পদক্ষেপ এবং শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে, তা পড়ার পর একটি হলফনামায় সই করার কথা পড়ুয়াদের। সেই হলফনামার প্রতিলিপি কি কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে? থাকলে তা জমা করতে হবে।

৪. শুধু পড়ুয়া নয়, তাঁদের অভিভাবকদের সই করা এ ধরনের হলফনামার প্রতিলিপি কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে ইউজিসি। থাকলে সেটাও পাঠাতে হবে।

৫. যে সব পড়ুয়া হস্টেলে থাকতে ইচ্ছুক, তাঁদের কি অতিরিক্ত একটি হলফনামায় সই করিয়েছিল প্রতিষ্ঠান? তাঁদের অভিভাবকদেরও কি অতিরিক্ত কোনও হলফনামায় সই করানো হয়েছিল? সেই সংক্রান্ত তথ্য জমা করতে হবে।

৬. মৃত পড়ুয়া এবং তাঁর পরিবার হস্টেলে থাকার জন্য অতিরিক্ত হলফনামায় সই করেছিলেন? থাকলে তার প্রতিলিপি পাঠাতে হবে।

৭. শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে শিক্ষক, ওয়ার্ডেন, ছাত্রদের প্রতিনিধি, অভিভাবক, জেলা প্রশাসন, পুলিশের সঙ্গে কি কোনও বৈঠকে বসেছিলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান? বসে থাকলে তা কত ক্ষণের জন্য? জানাতে হবে ইউজিসিকে।

৮. ক্লাস শুরু হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যে নতুন ভর্তি হওয়া পড়ুয়া এবং পুরনো পড়ুয়াদের যৌথ কাউন্সিলিংয়ের কোনও ব্যবস্থা কি করা হয়েছে? যদি হয়ে থাকে তার তারিখ এবং কত ক্ষণ ধরে তা চলেছিল, তা জানাতে হবে।

৯. শিক্ষাবর্ষের শুরুতে নবীনদের সঙ্গে প্রবীণ পড়ুয়াদের পরিচয় করানোর জন্য কোনও অনুষ্ঠান (ওরিয়েন্টেশন)-এর আয়োজন কি করা হয়েছিল? সেখানে কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান উপস্থিত ছিলেন? তার তারিখ জানাতে হবে।

১০. নতুন ভর্তি হওয়া প্রত্যেক পড়ুয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য কোনও শিক্ষককে কি মনোনীত করেছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান? ওয়ার্ডেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং হস্টেলের ঘরে আচমকা পরিদর্শনের জন্য কি কোনও শিক্ষককে মনোনীত করা হয়েছিল? মৃত পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার ভার কোন শিক্ষকের উপর পড়েছিল? তাঁর নাম জানাতে হবে।

১১. নতুন ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের কি হস্টেলের আলাদা ব্লকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল? ওই ব্লকে কোনও সিনিয়র ছাত্র যাচ্ছেন কি না, তা নজরে রাখার ব্যবস্থা কি হয়েছিল? পড়ুয়াদের হস্টেলের ঘর বণ্টনের বিষয়ে বিশদে জানাতে হবে।

১২. ভর্তি হওয়ার পর পড়ুয়ারা র‌্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন কি না জানতে প্রথম তিন মাস ধরে প্রতি ১৫ দিন অন্তর কোনও সমীক্ষার ব্যবস্থা কি হয়েছে? সেই সংক্রান্ত তথ্য জানাতে হবে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই ১২ প্রশ্নের জবাব তথ্য-সহ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউজিসিকে জানাতে হবে। গত পাঁচ বছরে এই সংক্রান্ত কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে সেই রিপোর্টও জানাতে হবে কর্তৃপক্ষকে। ইউজিসির তরফে জানানো হয়েছে, এই সময়সীমার মধ্যে কর্তৃপক্ষ কোনও জবাব না-পাঠালে মনে করা হবে, তাঁদের এ বিষয়ে কিছু বলার নেই। সে ক্ষেত্রে ইউজিসির র‌্যাগিং-বিরোধী নীতির (২০০৯) ৯.৪ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

JU Student Death UGC Jadavpur University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy