ত্রিস্রোতা চৌধুরী এবং রজত মজুমদার
পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব সমুদ্রে, এমন তত্ত্ব বহু দিনের পুরনো। কিন্তু প্রাণের উদ্ভব যে স্থলভূমিতেও হতে পারে, সে ব্যাপারে জোরালো প্রমাণ পেশ করেছেন দুই বাঙালি বিজ্ঞানী। মাসকটের ‘জার্মান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ইন ওমান’-এর ভূতত্ত্বের শিক্ষক রজত মজুমদার এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্বের গবেষিকা ত্রিস্রোতা চৌধুরী ওড়িশার সিংভূমে পাললিক শিলার মধ্যে ৩৪০ কোটি বছরের পুরনো প্রাণের নিদর্শন পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণা ‘প্রিক্যামব্রিয়ান রিসার্চ’ নামে একটি গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
কয়েক বছর আগেই রজতবাবু এবং ত্রিস্রোতা এই গবেষণার সূত্রপাত করেন। ওড়িশার কেওনঝড়ের কাছে তাঁরা ৩৪০ কোটি বছরের পুরনো শিলা খুঁজে পেয়েছেন। ওই শিলা থেকে সমুদ্র সৈকত এবং নদী প্রবাহের অস্তিত্ব মিলেছে। ওই বিজ্ঞানীদ্বয়ের বক্তব্য, ওই শিলা ৩৪০ কোটি বছর আগে স্থিতিশীল এক মহাদেশের ইঙ্গিত দেয়। এর সঙ্গেই প্রাণের উদ্ভবের তত্ত্বকে জুড়েছেন তাঁরা। কী ভাবে?
কয়েক বছর আগে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রাণের উদ্ভবের কথা দাবি করেছিলেন এক দল ভূতত্ত্ববিদ। পরবর্তী কালে এক দল অস্ট্রেলীয় এবং ব্রিটিশ ভূতত্ত্ববিদ তাঁদের গবেষণায় দাবি করেছিলেন, কানাডায় প্রাপ্ত পাথর থেকে প্রাণের উদ্ভবের ব্যাখ্যা মিলেছে। তবে তাঁদের তত্ত্ব কঠোর ভাবে সমালোচিত হয়। রজতবাবুর কথায়, ‘‘ওই বিজ্ঞানী দলে কোনও পাললিক শিলা বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তাই যথাযথ ব্যাখ্যা অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা দিতে পারেননি।’’ তাঁর মতে, স্থলভূমিতে প্রাণের উদ্ভবের ব্যাখ্যা দিতে গেলে স্থিতিশীল মহাদেশের ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন। সেটা এই দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণায় উটে এসেছে। একই সঙ্গে রজতবাবু বলছেন, মহাদেশ এবং মহাসমুদ্র যে বারবার ওঠানামা করেছে সে প্রমাণও মিলেছে।
তবে সিংভূমের প্রাপ্ত তথ্য আপাতত প্রাথমিক সূত্র বলেও মনে করছেন রজতবাবু ও ত্রিস্রোতা। তাঁদের মতে, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দক্ষিণ ভারতের কর্নাটকে আরও বিস্তারিত সমীক্ষা করলে প্রাণের উদ্ভব সম্পর্কে ব্যাখ্যা সম্ভব। রজতবাবু আরও জানান, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজতে একাধিক অভিযান চলছে। পাথর এবং মরুভূমির মধ্যে এই সূত্রের মাধ্যমে প্রাণের খোঁজ চালানো যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy