পয়গম্বর শেখ ও জামিরুল শেখ
বর্ধমানের খাগড়াগড়ে ২০১৪ সালের বিস্ফোরণের পরে টানা ধরপাকড়়ে পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বলে গোয়েন্দাদের একাংশের ধারণা হয়েছিল। কিন্তু দুই যুবক ধরা পড়ে জেরায় জানাল, নব্য জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) হিসেবে তারা এ রাজ্যে ফের ঘাঁটি তৈরির চেষ্টা করছিল।
পয়গম্বর শেখ ও জামিরুল শেখ নামে মুর্শিদাবাদের দুই যুবককে বুধবার বিস্ফোরক তৈরির ৫০ কিলোগ্রাম মশলা-সহ গ্রেফতার করা হয়। কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসটিএফ) মুরলীধর শর্মা বৃহস্পতিবার জানান, পয়গম্বর ধরা পড়েছে শামসেরগঞ্জে। জামিরুল দার্জিলিঙের ফাঁসিদেওয়ায়। ধৃতদের কাছ থেকে ৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল ফোন ও গ্লাভস পাওয়া গিয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি বুদ্ধগয়ায় দলাই লামার পরিদর্শনের সময়ে যে-বিস্ফোরণ হয়েছিল, তাতেও তারা জড়িত বলে স্বীকার করেছে ধৃতেরা। সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় এ দিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জানান, আইএসের সঙ্গেও ওই দু’জনের যোগ আছে।
সম্প্রতি জাল নোট পাচারকারীদের সূত্রে পয়গম্বর ও জামিরুলের খোঁজ পান গোয়েন্দারা। লালবাজার সূত্রের খবর, স্থানীয় একটি স্কুলের আরবি ভাষার শিক্ষক ও আতরের ব্যবসায়ী পয়গম্বর এবং কাঁঠালপাতার ব্যবসায়ী জামিরুল জেরায় জানিয়েছে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদেই নব্য জেএমবি বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণ ঘটাতে চাইছিল। একটি আইইডি ফাটলেও সাতটি ফাটেনি। সেই সব বিস্ফোরক বিহারে পাঠানো হয়েছিল মুর্শিদাবাদ থেকেই।
এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, খাগড়াগড়-তদন্তেও পয়গম্বরের নাম উঠেছিল। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তাকে জেরা করেছিলেন। জেরায় ওই যুবক পুলিশকে জানিয়েছে, খাগড়াগড় মামলায় অভিযুক্ত, জেএমবি চাঁই হাতকাটা নাসিরুল্লা ও তালহা শেখের কাছে ২০১২-’১৩ সালে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল সে। জঙ্গি কাজকর্মের জন্য লোকলস্কর ও গাড়ি জোগা়ড় করত জামিরুল। ধৃতদের এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
শামসেরগঞ্জের কাঁকুড়িয়া গ্রামের ছেলে পয়গম্বরের গ্রেফতারির খবরে সেখানকার বাসিন্দারা হতবাক। তাঁরা জানান, পয়গম্বরের বাবা হজরত আলি মারা গিয়েছেন, মা আছেন। পয়গম্বরের শ্বশুরবাড়ি ঝাড়খণ্ডে। বিহার-সহ বিভিন্ন জায়গার ইসলামি স্কুলে লেখাপড়া করেছে সে। পড়াত স্কুলেই। বরাবরই সাদাসিধে ছেলে বলে পরিচিত ছিল পয়গম্বর। বুধবার গোয়েন্দারা স্কুলে গিয়ে তাকে জেরা করেন। সেখান থেকেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবককে। শামসেরগঞ্জ এবং লাগোয়া এলাকায় লাগাতার তল্লাশি চলছে। বৃহস্পতিবার একটি আমবাগান থেকে ব্যাটারি, বিদ্যুতের তার এবং বোমা উদ্ধার হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy