মাগুর চাষ করতেই এমন পাকাপোক্ত সুড়ঙ্গ? —ফাইল চিত্র
মাগুর মাছের চাষ করতেই বাড়ির ভিতরে খাটের তলায় সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছিল! পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় এমনটাই দাবি করেছেন কুলতলির সাদ্দাম সর্দার। তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গের মুখে জাল দিয়ে আটকে মাগুর মাছ চাষ করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে প্রতারণা চক্র নিয়ে অভিযোগের তদন্তে গিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে সুড়ঙ্গের হদিস পেয়েছিল পুলিশ। বুধবার রাতে সাদ্দাম গ্রেফতার হয়ে আদালতের নির্দেশে এখন পুলিশি হেফাজতে। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, সাদ্দাম জেরায় জানিয়েছেন, তিনি পেশায় মাছ চাষি। ছোটবেলা থেকেই মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত। ভেড়িতে মাছ চাষ করে সংসার চলত। বাড়ির পাশে খালের জলের ঢেউকে কাজে লাগিয়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে মাগুর মাছের চাষ করার দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই মতো সুড়ঙ্গের মুখে জাল দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীরা আপত্তি করায় তা আর হয়ে ওঠেনি। সেই থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় তালাবন্ধ হয়ে পড়ে ছিল সুড়ঙ্গটি।
গত সোমবার কুলতলির জালাবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের পয়তারহাটে সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। তার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সাদ্দাম ও তাঁর ভাই সইরুল। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান ছিল, বাড়ির ভিতরের ওই সুড়ঙ্গ দিয়েই পালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কারণ, সুড়ঙ্গটি বাড়ির পাশে একটি খালে গিয়ে মিশেছে। আর খালটি মিশেছে মাতলা নদীতে। সাদ্দামকে জেরা তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সোমবারের ঘটনার পর ডিঙি করেই খাল পার করেছিলেন সাদ্দাম। তার পর প্রায় সারা দিনই প্লাস্টিক পেতে করলার ক্ষেতে সময় কাটান। অন্ধকার নামতেই পায়ে হেঁটে যান ঝুপড়িঝাড়ায়। যাওয়ার পথে রাস্তার দোকান থেকে খাবারও কিনেছিলেন সাদ্দাম। এর পর ঝুপড়িঝাড়ায় বানীরধল এলাকায় একটি মাছের ভেড়ির আলাঘরে আশ্রয় নেন। বুধবার রাতে সেখান থেকেই সাদ্দামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাদ্দামের সঙ্গেই গ্রেফতার হয়েছেন সিপিএম নেতা মান্নান খান। পুলিশ সূত্রে খবর, আলাঘরটি তাঁরই।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, সাদ্দাম জেরায় দাবি করেন, ভৌগোলিক কারণে মাছের ভেড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। গাড়ি নিয়ে ওই এলাকায় কারও পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। একমাত্র বাইক বা সাইকেলে বা পায়ে হেঁটেই যাওয়া-আসা করতে হয়। তা ছাড়া আলাঘরের পাশেই ছিল ঠাকুরানি নদী। পুলিশ তাড়া করলে ওই নদী ধরেই জলপথে যে কোনও জায়গায় পালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল তাঁর পক্ষে। এমনকি চাইলে বাংলাদেশেও চলে যেতে পারতেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, সাদ্দামদের বাবার নাম মুকসেদ। তিনি পেশায় কবিরাজি। সাদ্দামের মতো তিনিও সোনার মূর্তি দেখিয়ে প্রতারণা কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তখন কারবার ছোটই ছিল। এক বার প্রতারণা করে ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। তার পরেই ওই চক্র থেকে বেরিয়ে আসেন। মুকসেদের তিনটি বিয়ে। সাদ্দাম দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। আর তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান হলেন সইরুল। অভিযোগ, সোমবার পেশায় দর্জি সইরুলই পুলিশের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। তার পর থেকে তিনিও পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সইরুল ছাড়াও সাদ্দামের খুড়তুতো ভাই সাকাত প্রতারণা চক্রের অন্যতম মাথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy