কৌস্তুভ বাগচী। ফাইল চিত্র।
সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনের আগে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (পিসিসি) প্রতিনিধি বাছাই নিয়ে এক প্রস্ত বিতর্ক বেধেছিল। এ বার রাজ্য থেকে এআইসিসি-র সদস্য তালিকা ঘিরে ক্ষোভ মাথা চাড়া দিল। বঙ্গ কংগ্রেসের রাজ্য ও জেলা স্তরের বেশির ভাগ পরিচিত মুখেরই জায়গা হয়েছে ওই তালিকায়। কিন্তু নাম নেই দলের দুই পরিচিত আইনজীবী-নেতা ঋজু ঘোষাল ও কৌস্তুভ বাগচীর। তাঁরা দু’জনেই সমাজ মাধ্যমে এবং তার বাইরেও ক্ষোভ গোপন করেননি। ছত্তীশগঢ়ের রায়পুরে কংগ্রেসের আসন্ন প্লেনারি অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন এআইসিসি-র সদস্যেরা। তার আগেই এমন বিতর্ক।
এ রাজ্য থেকে ৬৮ জন নির্বাচিত এবং আরও ২০ জন কো-অপ্ট করা এআইসিসি সদস্য তথা প্রতিনিধির নাম প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দার্জিলিং, কলকাতার মতো কয়েকটি জেলা থেকেই বেশি প্রতিনিধি সেখানে স্থান পেয়েছেন। এআইসিসি-র সদস্য হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির রাজনৈতিক সচিব ও প্রদেশের সম্পাদক (সংগঠন) নিলয় প্রামাণিকও। তালিকায় ঠাঁই না পেয়ে ঋজু প্রশ্ন তুলেছেন, এআইসিসি সভাপতি নির্বাচনের প্রার্থী শশী তারুরের অন্যতম এজেন্ট হিসেবে কাজ করার মাসুলই কি তাঁকে দিতে হল? বিষয়টি তারুরের নজরেও এনেছেন তিনি। সূত্রের খবর, তারুর তাঁকে জানিয়েছেন, বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এনএসইউআই-এর সাধারণ সম্পাদক রোশন লাল বিট্টু, দিল্লির প্রাক্তন মন্ত্রী প্রবীণ দাভর, প্রাক্তন বিধায়ক অজয় চতুর্বেদীর মতো বেশ কিছু নেতা এ বার এআইসিসি তালিকায় জায়গা পাননি। তারুরের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট সলমন সোজ অবশ্য মনে করছেন, ঘটনাচক্রে তাঁদের সঙ্গে নির্বাচনে কাজ করা কিছু নেতা বাদ পড়েছেন ঠিকই। তবে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সোজেরা সকলেই রায়পুর যাচ্ছেন। তারুর নিজেও এ দিন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে নাগাল্যান্ডে ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন। এরই মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে আসা প্রাক্তন মন্ত্রী হাফিজ আলম সৈরানিকে প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি এবং প্রাক্তন বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জকে (ভিক্টর) সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেসের কমিটিই যেখানে এআইসিসি নতুন করে ঘোষণা করেনি, সেখানে প্রদেশ কংগ্রেসের এমন নিয়োগ নিয়েও দলে প্রশ্ন উঠেছে।
বাদ পড়ে ক্ষুব্ধ ঋজু বলছেন, ‘‘মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, এর পরে আর কী হবে কাজ করে? কিন্তু তার পরে মনে হচ্ছে, কংগ্রেসের উত্তরাধিকার রক্তে আছে (ঋজুর বাবা প্রয়াত অজয় ঘোষাল কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন)। পতাকাটা তো কেউ কেড়ে নিতে পারবে না!’’ ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর হত্যা-সহ পুরবোর্ড দখলের চেষ্টার বিরুদ্ধে মামলা, সাগরদিঘির গ্রেফতার এবং আরও নানা ঘটনায় দলের হয়ে আইনি লড়াইয়ে ছিলেন কংগ্রেসের মুখপাত্র কৌস্তুভ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস ছাড়ার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারি না। কিন্তু সম্মানের সঙ্গে দল করাটা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। কারণ, আমার পক্ষে স্তাবকতা করা সম্ভব নয়।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র অশোক ভট্টাচার্যও এআইসিসি সদস্য তালিকায় নেই। তবে ঋজু, কৌস্তুভেরা স্থান না পেলেও তরুণ মুখ হিসেবে সুমন পাল, অভিজিৎ ভট্টাচার্য, শাহিনা জাভেদ, সমীর আলম, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ প্রসাদ, আজ়হার মল্লিকেরা সুযোগ পেয়েছেন বলে কংগ্রেস সূত্রের যুক্তি। আবার রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় রাজ্য থেকে দুই স্থায়ী পদযাত্রীর মধ্যে পূজা রায়চৌধুরী এআইসিসি-তে জায়গা পেলেও কিরণ ছেত্রী সুযোগ পাননি! দলের বর্ষীয়ান সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য অবশ্য বলেছেন, ‘‘তরুণ প্রজন্মই তো দলের ভবিষ্যৎ। তাদের কারও সমস্যা বা ক্ষোভ হয়ে থাকলে আলোচনা করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy