প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখায় খড়্গপুর-সাঁতরাগাছি স্টেশনের মধ্যে ঘন্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানোর মহড়া হল বৃহস্পতিবার। ওই গতিবেগে মাত্র ৫৭ মিনিটে খড়্গপুর থেকে সাঁতরাগাছি এসে পৌঁছেছে ট্রেন ইঞ্জিন। রেলের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা সিআরআইএস’র ছাড়পত্র মিললেই ওই শাখায় এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে চালানো হবে।
রেল সূত্রের খবর, বছর খানেক আগে খড়্গপুর-সাঁতরাগাছি স্টেশনের মধ্যে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো গত সাত মাস ধরে ওই শাখায় রেল ট্র্যাকগুলি খোলনলচে বদলে ফেলা হয়েছে। লাইনের পুরনো সুইচগুলি বদলে লাগানো হয়েছে আধুনিক থিক ওয়েব সুইচ। যে জায়গায় রেল লাইন বাঁক নিয়েছে, সেখানে ‘সুপার অ্যালিভেশন’ বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ রেলের বাঁকে দুটি পাতের উচ্চতার মধ্যে নিখুঁত বৈপরীত্য আনা হয়েছে। ব্রিজ, কালভার্ট ইত্যাদি জায়গাগুলিতে ট্র্যাকের গার্ডার, চ্যানেল স্লিপার ইত্যাদি বদলে ফেলা হয়েছে বা নতুন করে মেরামত করা হয়েছে। লেভেল ক্রসিংগুলিতেও ব্যাবহার করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি।
রেললাইনের এই সমস্ত পরিবর্তনের পরে গত কয়েক মাস ধরে একটি ইঞ্জিন চালিয়ে একাধিকবার মহড়া দেওয়া হয়। সে সময় ইঞ্জিনের চাকায় ‘ওএমএস’ নামে একটি যন্ত্র লাগানো ছিল। ওই যন্ত্র রেললাইনে কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা জানিয়ে দেয়। গত কয়েক মাসে যে কটি মহড়া হয়েছে, তার ‘ওএমএস রিপোর্ট’ সন্তোষজনক ছিল না।
রিপোর্টের ভিত্তিতে লাইন সারানো হয়। তার পরে বৃহস্পতিবার খড়্গপুর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে একটি ইঞ্জিন চালানো হয়। রেল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের ইঞ্জিনের চাকায় থাকা ওএমএস থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট ছিল সন্তোষজনক। ফলে দ্রুত গতির ট্রেন চলাচলের পরীক্ষায় পাস করে যায় খড়্গপুর-সাঁতরাগাছি শাখার রেলওয়ে ট্র্যাক। রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, যত কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে, মহড়ায় তার থেকে পাঁচ-দশ কিলোমিটার বেশি বেগে ইঞ্জিন চালাতে হয়েছিল। রেলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবারের ওএমএস রিপোর্ট সন্তোষজনক। রিপোর্টটি সিআইআরসির কাছে পাঠানো হবে। সংস্থার প্রতিনিধিরা ছাড়পত্র দিলেই বাড়ানো হবে ট্রেনের গতি।’’ এবার ওই শাখায় রেলওয়ে ট্র্যাক পরিদর্শনে আসবে সিআরআইএস। সংস্থার প্রতিনিধিরা ছাড়পত্র দিলে আধুনিক হালকা ওজনের কোচগুলিকে ওই গতিবেগে চালানোর জন্য বেছে নেওয়া হবে।
কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর শাখায় যেখানে সিগন্যালের অভাবে মাঝেমধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন, সেখানে কীভাবে এই গতিতে চলবে এক্সপ্রেস ট্রেনে?
রেল সূত্রের খবর, অল্প সময়ের ব্যবধানে অনেক বেশি ট্রেন চালানোর জন্য খড়্গপুর শাখায় কয়েক বছর আগে চালু হয়েছে অটো ব্লক সিস্টেম। এই পদ্ধতিতে এক কিলোমিটার ব্যবধানে একটি করে ট্রেন চালানো হচ্ছে এখন।
রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, এই শাখায় ট্রেন বাড়লেও লাইন বাড়েনি। তবে অটো ব্লক সিস্টেম চালু থাকায় ট্রেনের গতি বাড়াতে কিছুটা হলেও সাহায্য পাওয়া যাবে।’’
এ বিষয়ে খড়্গপুর শাখার জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী বলেন, ‘‘খড়গপুর-সাঁতরাগাছির মধ্যে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানোর মহড়া সফল হয়েছে। শীঘ্রই আমরা এই গতিবেগে ট্রেন চালানো শুরু করব। প্রথমে রাজধানী ও দুরন্ত এক্সপ্রেসকে এই গতিতে চালানো হবে। ধাপে ধাপে অন্য এক্সপ্রেসগুলির গতি বাড়ানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy