প্রতীকী ছবি।
বন্দরে প্রভাব তো পড়ছেই, কিন্তু বিশ বা তার বেশি চাকার ট্রেলার বন্ধের জেরে রাজ্যে পণ্য পরিবহণও বেহাল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পরিবহণ দফতর শুক্রবার রাতেই বিশ বা তার বেশি চাকার ট্রেলার রাজ্যে চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে রাজ্যের কোথাও এই ধরনের গাড়ি আর চলবে না।
পরিবহণ দফতরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছে, বড় ট্রেলারে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, কৃষি সরঞ্জাম, ছোট-মাঝারি মাপের যাত্রবাহি যান সরাসরি কারখানা থেকে গন্তব্যে পৌঁছায়। এ ছাড়া কারখানা, সেতু, ফ্লাইওভার, রেল-সেতু, ইস্পাতের শিট, নিউজপ্রিন্ট বা নানান পরিকাঠামো প্রকল্পের সুপারস্ট্রাকচারও বড় গাড়িতে রাজ্যে আসে। ছো়ট গাড়িতে সে সব কী ভাবে আনা সম্ভব হবে তা নিয়ে চিন্তায় পরিবহণ ব্যবসায়ীরা। শহরে রান্নার গ্যাসের সরবরাহও মার খেতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করেছেন। এক পরিবহণ কর্তার কথায়, ‘‘দুর্বল সেতু বাঁচাতে গিয়ে নতুন পরিকাঠামো নির্মাণের খরচ বাড়িয়ে দেওয়া হল। এখন একই পরিমাণ পণ্য ছোট ট্রেলারে আনতে খরচ বেশি পড়বে।’’
যদিও রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, ‘‘মানুষের জীবনের চেয়ে দামি কিছু হতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে আমরা বড় ট্রেলারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বড় ট্রেলার না আসার প্রভাব নিয়েও চিন্তিত বন্দর কর্তৃপক্ষও। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার বলেন, ‘‘বড় বাক্সবন্দি পণ্য পরিবহণে সমস্যা হবে। তবে বন্দর সচল রাখার জন্য বিকল্প পন্থা খোঁজার চেষ্টা চলছে।’’ হাইড রোডের সংস্কার করে দেওয়া হবে বলে জানান চেয়ারম্যান। শনিবার তিনি হাইড রোড ঘুরে দেখেন। তাঁর কথায়, ‘‘হাইড রোড ঠিক মতো চালু হলে ট্রাফিক সমস্যা কাটতে পারে। বন্দরের ট্রেলারও যাতায়াত করতে পারবে।’’
বন্দর সূত্রের খবর, শনিবার সকাল পর্যন্ত ২০০০ কন্টেনার জাহাজে তোলা ও নামানো হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই পুলিশ কন্টেনারবাহী ট্রেলারগুলিকে বেরিয়ে যেতে রাস্তা খুলে দিয়েছে। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় বন্দরে আটকে থাকায় প্রায় ১৪০০ ট্রেলার শহরের বাইরে বেরিয়ে যেতে পেরেছে। শনি-রবিবারও রাস্তা খোলা থাকবে। এক বন্দর কর্তার কথায়, ‘‘একই পরিস্থিতি থাকলে বন্দরের অবস্থা স্বাভাবিক থাকবে। কলকাতা পুলিশও সহযোগিতা করছে।’’
শুক্রবার রাত থেকে পূর্ব বর্ধমানে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী ভারী গাড়ি আটকানো শুরু করেছে পুলিশ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের পরে বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেতুগুলি নিয়ে রিপোর্ট পাওয়ার পরে ভারী যান যাতায়াত করতে দেওয়া যাবে কি না, তা ঠিক করা হবে। পশ্চিম বর্ধমানেও জাতীয় সড়কে দিনভর ভারী গাড়ি আটকানো হচ্ছে। তবে রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত সেগুলি ধাপে-ধাপে ছাড়া হচ্ছে। এর জেরে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন বলে জানাচ্ছেন ট্রাক-ডাম্পারের চালক-খালাসিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy