Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Transport Department

‘বাউন্সার’ দিয়ে বাস তুলে নিয়ে যাওয়ায় শ্রীরামপুরে বৈঠক ডাকলেন ক্ষুব্ধ পরিবহণ মন্ত্রী

শ্রীরামপুরে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে চলেছেন পরিবহণ মন্ত্রী। ঋণ শোধ না করায় গত বুধবার শ্রীরামপুর-নিউ টাউন ২৮৫ নম্বর রুটের তিনটি বাস তুলে নেয় ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। এর পরই ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি।

Transport Minister Snehasis Chakraborty have called a meeting after the mess.

পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৩১
Share: Save:

বাউন্সার দিয়ে যাত্রীবোঝাই বাস খালি করিয়ে তা তুলে নিয়ে গিয়েছিল ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। সেই ঘটনার জেরে এ বার নিজের খাসতালুক শ্রীরামপুরে পরিবহণ দফতরের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে চলেছেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। গত বুধবার ঋণ শোধ না করায় শ্রীরামপুর-নিউ টাউন ২৮৫ নম্বর রুটের তিনটি বাস তুলে নিয়ে যায় ঋণ প্রদানকারী সংস্থা। এই ঘটনা জানার পরেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, আগামী ৯ নভেম্বর শ্রীরামপুরের সর্বশিক্ষা সভাঘরে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলির পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের। বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই বৈঠকে আধিকারিকদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বৈঠককে পর্যালোচনা বৈঠক বলা হলেও, সম্প্রতি বাউন্সার দিয়ে বাস তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটায় এই বৈঠকটি ডাকা হয়েছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর।

উল্লেখ্য, বালি ব্রিজ থেকে নিউটাউন-শ্রীরামপুরগামী একটি বাস আটক করে ঋণপ্রদানকারী সংস্থার লোকজন। বাসচালক এবং কনডাক্টর-সহ বাসে থাকা যাত্রীদের বলপূর্বক নামিয়ে বাসটি নিয়ে চলে যায় ঋণপ্রদানকারী সংস্থার বাউন্সারেরা। অভিযোগ, এর পর ওই রুটের আরও দু’টি বাস একই কায়দায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। উত্তরপাড়া এবং বালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমা এলাকার বাসিন্দা পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস। জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক হলেও, তাঁর রাজনৈতিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ড জুড়ে রয়েছে শ্রীরামপুর। তাই এমন ঘটনায় পরিবহণ দফতর যে কড়া পদক্ষেপ করবে, তা আগেই স্পষ্ট হয়েছিল প্রশাসনের কাছে।

২০১৮ সালে শ্রীরামপুর-নিউ টাউন ২৮৫ নম্বর রুট চালু হয়। বর্তমানে এই রুটে ১৪টি বাস চলে। বাসগুলির মধ্যে কিছু বাস ঋণদানকারী সংস্থার থেকে ঋণ নিয়ে কেনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কয়েক জন সময়ে ঋণের কিস্তি দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল। ঋণপ্রদানকারী সংস্থাটি ঋণ আদায়ের জন্য বেশ কয়েক বার তাগাদাও দিয়েছিল। কয়েক জন মালিক বাড়তি সময় চেয়ে আদালতে গিয়েছেন। কিন্তু তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সংস্থার উপর বিরক্ত পরিবহণ দফতর। বুধবার বাউন্সার দিয়ে বাস নিয়ে যাওয়ার পর দিন বৃহস্পতিবার উত্তরপাড়া থানা একটি বাস উদ্ধার করে। সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই শ্রীরামপুরে বৈঠক ডাকলেন পরিবহণমন্ত্রী।

কিন্তু বাসমালিকদের একাংশের কথায়, ঋণ প্রদানকারী সংস্থা এবং বাসমালিকদের মধ্যে সমস্যা শুধুমাত্র শ্রীরামপুর বা নিউ টাউনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই চিত্র সার্বিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি এলাকাতেই দেখা যাবে। হয়তো পরিবহণ মন্ত্রীর নিজের কেন্দ্র বলে এই ঘটনার প্রতি বেশি মনোযোগী হয়েছে দফতর। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে সরকার পক্ষের থাকাটা বাঞ্ছনীয় বলেই মনে করছেন বেশির ভাগ বাস মালিক। এ প্রসঙ্গে সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসের নেতা টিটু সাহা বলেন, “এ ক্ষেত্রে পরিবহণ মন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে সবার আগে ঋণ প্রদানকারী সংস্থা এবং বাসমালিকদের নমনীয় হয়ে এক টেবিলে আলোচনায় বসা উচিত। আলোচনার মাধ্যমে যে কোনও ধরনের সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাই বলপূর্বক কোনও কাজ না করে দু’পক্ষকেই আমরা আলোচনায় বসার অনুরোধ করব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE