অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
এক বাসচালককে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিঘায় বেসরকারি বাসচালকদের কর্মবিরতিতে নাকাল হলেন পর্যটকরা।
বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দিঘা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনও বেসরকারি বাস না বেরোনোয় দিঘা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে নাকাল হতে হয় পর্যটক থেকে সাধারণ যাত্রীদের। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে কর্মবিরতি উঠলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। স্বস্তি পান পর্যটকেরা।
ঘটনার শুরু বুধবার রাতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দিঘা-বর্ডার লাগোয়া সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে কয়েকজন যুবক মদ্যপ অবস্থায় এক বেসরকারি বাসের চালককে মারধর করে বলে অভিযোগ। ভোলা দাস নামের ওই চালককে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। দিঘা থানায় এই নিয়ে অভিযোগও দায়ের করেন ভোলা। কিন্তু বাসচালককে মারধর নিয়ে এলাকায় গোলমাল শুরু হয়। ভোলার দাবি, “বুধবার রাতে বাস পার্কিংয়ের সময় ওড়িশার কয়েকজন যুবক বাসের পিছনে চলে আসে। তারা মদ্যপ ছিল। আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটির সময় আমাকে মারধর করে।’’ ঘটনার পর প্রতিবাদে আরও চালকেরা মিলে পথ অবরোধ করেন। খবর পেয়ে দিঘা থানার পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন বেসরকারি বাসের চালকেরা। ফলে রাতের বাস সার্ভিস তো বটেই, এমনকি বৃহস্পতিবার সকাল প্রায় দশটা পর্যন্ত যত বেসরকারি বাস সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ার কথা ছিল, তাও বন্ধ থাকে। ফলে এ দিন সকাল থেকে কলকাতা-সব বিভিন্ন জায়গায় ফেরার জন্য বাস ধরতে গিয়ে নাকাল হতে হয় পর্যটকদের। আগে থেকে বাসে আসন সংরক্ষণ করেও বাস না পেয়ে অনেকে বিপাকে পড়েন।
অনেকে নিরুপায় হয়ে সরকারি বাসের জন্য ছোটেন। কিন্তু সেখানেও ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই অবস্থায় অনেকে এ দিন বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা বাতিল করে ফের হোটেলে ফিরে যান। কলকাতার দমদম থেকে গাড়ি নিয়ে দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন সুদেশ কান্ডার। তিনি উদয়পুর সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার জন্য এ দিন ভোরে ওড়িশার দিকে গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। অবরোধে আটকে পড়ে তাদের গাড়ি। সুদেশবাবু বলেন, “অবরোধে আটকে নাজেহাল হতে হয়েছে।’’ সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ দিঘায় বাসের জন্য অপেক্ষারত বেলঘরিয়ার সুজয় পাল বলেন, “সরকারি বাসে ভিড়। সঙ্গে স্ত্রী ও ছোট শিশু রয়েছে। তাই বেসরকারি বাসে ফিরব ঠিক করি। কিন্তু যা অবস্থা তাতে কখন বাস পাব সেই অপেক্ষায় আছি।’’
খবর পেয়ে এদিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ এলাকায় ছুটে আসেন জেলা সভাধিপতি দেবব্রত দাস। পর্যটকদের হয়রানির কথা ভেবে তিনি বেসরকারি বাসের চালক, কর্মী ও মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে জানানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। দেবব্রতবাবু বলেন, “থানায় অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তবে দিঘা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড ওড়িশা সীমানা লাগোয়া হওয়ায় এখানে পুলিশি নজরদারি ও টহল বাড়ানোর জন্য পুলিশকে বলব। সেইসঙ্গে সেন্টাল বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এ ছাড়া সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশি নজরদারি বানানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy