রবিবার নজরে পড়ে, কে বা কারা সাইনবোর্ডে ‘বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর বিধায়ক কার্যালয়’ লেখা অংশটি সাদা রং দিয়ে মুছে দিয়েছেন। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনে জয়ী হলেও দলীয় কার্যালয়ে পা বাড়াননি। সেখান থেকে পরিষেবাও অমিল। অভিযোগ, সে ক্ষোভেই বাঁকুড়ার তালড্যাংরা বিধানসভা কেন্দ্রের সিমলাপালে দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড থেকে বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর নাম-সহ একটি অংশ মুছে দিলেন তৃণমূল কর্মীরাই। এ নিয়ে বাঁকুড়া জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল শুরু হয়েছে। এ ঘটনাকে তৃণমলের নিচুতলার কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করেছেন শাসকদলের এক স্থানীয় নেতা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরূপ। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে তালড্যাংরা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছেন অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর জয়ের পর সিমলাপালের তৃণমূল কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছিল— ‘তালড্যাংরা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর বিধায়ক কার্যালয়’। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রবিবার নজরে পড়ে, কে বা কারা ওই সাইনবোর্ডে ‘বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর বিধায়ক কার্যালয়’ লেখা অংশটি সাদা রং দিয়ে মুছে দিয়েছেন। যদিও ওই কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে থাকা ‘মা-মাটি-মানুষ’ লেখা অংশটি অক্ষত।
কেন এমন কাণ্ড? সিমলাপালের স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিখিল সিংহ মহাপাত্রের দাবি, ‘‘তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীকে আমরা কাছের এবং কাজের মানুষ হিসাবেই জানতাম। কিন্তু গত ছ’সাত মাসে তিনি সিমলাপালে আসেননি। বিধায়কের কাছ থেকে কোনও শংসাপত্র পেতে হলে বাঁকুড়া শহরে তাঁর বাড়িতে যেতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। এমনকি এই কার্যালয়ের ভাড়াটুকুও তিনি দেননি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মতোই তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তাঁরা বলছেন, ‘বিধায়ক যখন কার্যালয়ে আসেনই না, তখন আর এ সাইনবোর্ড রেখে কী হবে?’ ’’
এই অভিযোগে মানতে নারাজ অরূপ। তিনি বলেন, ‘‘সিমলাপালের বিধায়ক কার্যালয়টি আমি তৈরি করিনি। ওঁরা (তৃণমূলকর্মীরা) নিজেরাই ওই সাইনবোর্ড লিখেছিলেন। আবার নিজেরাই তা মুছে দিয়েছেন। মানুষের জন্য পরিষেবায় কারও ব্যক্তিগত অধিকার নেই। আদিবাসীরা ত্রিপল না পেলে আমি পাঠিয়ে দিয়েছি। সংখ্যালঘুরা খাবার না পেলে তা-ও পাঠিয়েছি। বিধায়কের কী দায়িত্ব, তা কারও কাছ থেকে আমাকে শিখতে হবে না।’’
তৃণমূলের অন্দরের এই তরজায় বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘বিধায়ককে নির্বাচনে জয়ী করতে তৃণমূলের যে কর্মীরা বাহুবল দেখিয়েছিলেন, হুমকি দিয়েছিলেন, আজ তাঁরাই নিজেদের দলের বিধায়কের নাম মুছে দিচ্ছেন। বিধায়ক নিজের বিধানসভা এলাকায় থাকেন না। তিনি বাইরে থাকতে থাকতে তালড্যাংরার মানুষের মনের বাইরে চলে গিয়েছেন। তাই এমন ঘটনা ঘটেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy