তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। —ফাইল চিত্র।
সকাল সওয়া ৯টা থেকে তিনি ‘উধাও’! তাঁর সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। কিছু ক্ষণ আগেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের সঙ্গে গাড়িতে উঠে চলে যেতে দেখা গিয়েছিল নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহাকে। তার পর থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাঁর বাড়িতে তালা। কোথায় গেলেন তাপস?
রবিবার সকাল থেকে ঘণ্টা তিনেকের জন্য তাপসের এই ‘উধাও’ রহস্যে ছড়াতে শুরু করে নানা ‘খবর’। জল্পনা ছড়ায়, তাপসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।
শনিবারই চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তাপসের আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়াল। প্রবীরের দুই সঙ্গী শ্যামল কয়াল এবং সুনীল মণ্ডলকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
তেহট্টের বিধায়ক তাপসের বাড়ি নদিয়ার পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকার কড়ুইগাছি গ্রামে। রবিবার সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ তাপসের দোতলা বাড়ির সামনে আচকাই তিনটি সাদা স্করপিও এসে দাঁড়ায়। স্থানীয়দের দাবি, গাড়িগুলি থেকে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাপসের বাড়িতে ঢোকেন। বিধায়কের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথোপকথনের পর সেই গাড়িগুলির একটিতে উঠে বসেন তাপস। রটে যায়, সাদা পোশাকের পুলিশ এসে তুলে নিয়ে গিয়েছে তাঁকে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও তাপসের বাড়ির সামনে ভিড় করতে থাকেন। ঘটনাচক্রে, তার পর থেকে দীর্ঘ ক্ষণ তাপসকে আর ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীদের দাবি, সে সময় থেকে তাপসের বাড়ি তালাবন্ধ ছিল।
জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশ জানায়, এ ব্যাপারে কিছুই জানা নেই তাদের। তত ক্ষণে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দাবি করে, আর্থিক প্রতারণা-কাণ্ডে তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সবের মধ্যেই অবশেষে ফোনে পাওয়া যায় বিধায়ককে। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় তাপসের। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের জল্পনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। না! আমাকে পুলিশে ডাকেনি। নিজের গাড়িতে করে ব্যক্তিগত কাজে কলকাতা যাচ্ছি।’’ তাপস বলেন, সকালে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি কল্লোল খাঁ-র সঙ্গে দেখা করে তিনি কলকাতায় রওনা হয়ে যান।
তাপসের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি এবং লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নামে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিযোগ জানিয়ে চিঠিও দিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। তবে তাপসের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই কিছু লোক ষড়যন্ত্র করছেন। কেন তিনি কলকাতায় এসেছেন? তাপস ফোনে বলেন, ‘‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতেই কলকাতায় এসেছি। আমার বিরুদ্ধে চলা তৃণমূলেরই একাংশের ষড়যন্ত্র নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব।’’
সকাল থেকে তালাবন্ধ তাপসের বাড়ির দরজা অবশ্য দুপুর দেড়টা নাগাদ খুলেছে। তাঁর ছেলে সাগ্নিক সাহাকে পাওয়া গেল বাড়িতে। প্রশ্ন শুনে বললেন, ‘‘দরজায় তালাবন্ধ করে আমি বাজারে গিয়েছিলাম। বাবা ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় গিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy