শিশির-দিব্যেন্দু শুধু দিল্লিই যাননি, অনুষ্ঠানের ব্যস্ততার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও করেছেন তাঁরা। —ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত তৃণমূল সংসদীয় দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী। ঘটনাচক্রে, নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন বয়কট করেছে ২০টি দল। তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূলও। অনেক আগেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বাদ দিয়ে সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধন হওয়ায় তাঁরা এই অনুষ্ঠান বয়কট করবে। রবিবার শিশির-দিব্যেন্দু শুধু দিল্লিই যাননি, অনুষ্ঠানের ব্যস্ততার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ও করেছেন তাঁরা।
কিন্তু দলের এই অবস্থান অমান্য করে রবিবার দিল্লিতে সংসদ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিশির-দিব্যেন্দু। এই প্রথম নয়, এর আগে গত বছর জুলাই মাসে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। ২১ জুলাই শহিদ দিবসের সমাবেশ শেষে কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করে সে কথা ঘোষণাও করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দলের সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে এনডিএ শিবিরের প্রার্থী জগদীপ ধনখড়কে ভোট দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন সাংসদ পিতা-পুত্র।
এখনও খাতাকলমে তৃণমূল সাংসদ তাঁরা। ২০০৯ সাল থেকে টানা তিনবার তৃণমূলের প্রতীকে কাঁথি থেকে সাংসদ হয়েছেন শিশির। আর পুত্র দিব্যেন্দু ২০১৬ সালে তমলুক লোকসভার উপনির্বাচন জিতে পরপর ২ বার তৃণমূলের প্রতীকে সাংসদ হয়েছেন। ২ জনেই তৃণমূলের প্রতীকে বিধায়কও ছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শিশির পুত্র শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। ২০২১ সালের বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দল হলে, বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পান নন্দীগ্রাম বিধায়ক শুভেন্দু। তার পর থেকেই তাঁর নিশানায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তাতেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছে।
এর পরেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শিশিরকে। সরানো হয় দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকেও। ২০২১ সালের ১ মার্চ এগরায় বিজেপির বিধানসভা ভোটের প্রচারে অমিত শাহের সভামঞ্চে হাজির হয়ে বক্তৃতাও করেছিলেন শিশির। বিধানসভা ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দিব্যেন্দু অবশ্য সরাসরি এখনও বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে যোগদান করেননি। তা সত্ত্বেও অধিকারী পরিবারের এই সদস্যের সঙ্গেও যোগাযোগ নেই তৃণমূল নেতৃত্বের। যদিও উপরাষ্ট্রপতি ভোটে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোটদান করায় তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছিল তৃণমূল সংসদীয় দল। কিন্তু সেই চিঠির পাল্টা কোনও জবাব দেননি দিব্যেন্দু। বরং আবারও তৃণমূল সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে শামিল হলেন অধিকারী পিতা-পুত্র। তাঁদের যোগদান প্রসঙ্গে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘বয়কটের কোনও বার্তা আমাদের কাছে আসেনি। আর নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। সেই ঘটনার সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে ভাল লাগছে। এতে রাজনীতি খোঁজা ঠিক হবে না।’’
যে শুভেন্দুর দলবদলের পর অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব, তিনি রবিবার দিনভর ব্যস্ত রইলেন দলীয় কর্মসূচিতে। সকালে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে শামিল হলেন, বিকেলে আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সোনারপুরে দলীয় মিছিলে হাঁটলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy