তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
যদি পারেন, তা হলে আটকান। দিল্লিতে পৌঁছে আবারও হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানালেন, দিল্লিতে সাংসদ এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পরেই নেওয়া হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। সোম এবং মঙ্গলবার দিল্লিতে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে অভিষেকের নেতৃত্বে প্রতিবাদ কর্মসূচি রয়েছে। সেই উদ্দেশ্যেই রবিবার রাতে দিল্লি পৌঁছলেন অভিষেক। রাতে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল কর্মীদের একটি দলও।
সাম্প্রতিক সময়ে বার বার অভিষেককে এই চ্যালেঞ্জ ছুড়তে শোনা গিয়েছে। রবিবার রাতে দিল্লি পৌঁছে সাংবাদিকদের আরও এক বার তিনি বলেন, ‘‘আবার বলছি, যদি পারেন আমাকে আটকান।’’ তবে তিনি এও বলেছেন, ‘‘আমি কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছি না। আগেও বলেছি। আবার বলছি।’’ প্রসঙ্গত, ৩ অক্টোবর অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বিবৃতি দিয়ে অভিষেক জানিয়েছিলেন, তিনি উপস্থিত থাকছেন না। কারণ ওই দিন দিল্লিতে তাঁর কর্মসূচি রয়েছে। এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে একটি বিস্তারিত বিবৃতি দেন অভিষেক। সেই পোস্টের শেষাংশে ইংরেজিতে লিখেছিলেন, ‘‘স্টপ মি ইফ ইউ ক্যান।’’ অর্থাৎ, পারলে আমায় আটকান। রবিবারও তাঁর গলায় শোনা গেল সেই সুর।
দিল্লির বিমানে ওঠার আগেও এই কথা বলেছেন অভিষেক। ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতা থাকলে তাঁকে আটকানো হোক। তাঁর কথায়, ‘‘নিজেদের পাওনা বুঝে নিতে দিল্লিতে প্রতিবাদ হবে, ক্ষমতা থাকলে আটকান। দিল্লির আন্দোলন হচ্ছেই, দিল্লি পুলিশকে কাজে লাগিয়ে অনেক তো আটকানোর চেষ্টা করলেন। ট্রেন, বিমান বাতিল করে, তা-ও তো পারলেন না।’’
দিল্লিতে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থক। কথা ছিল কর্মী, সমর্থকেরা দলের পক্ষে ভাড়া করা বিশেষ ট্রেনে করে দিল্লি যাবেন। শনিবার সকাল ৮টায় হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। তার ঠিক ১৪ ঘণ্টা আগে জানা যায়, দিল্লি যাওয়ার বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারেনি রেল। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপির দিকে আঙুল তোলেন অভিষেক। তিনি জানান, টাকা নিয়েও ট্রেন দেয়নি মোদী সরকার। তবে তৃণমূল বিকল্প ব্যবস্থা করে নেবে। তখনও তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের আটকানো যাবে না।’’ এর পর দিল্লিগামী উড়ান বাতিলের অভিযোগ তোলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনিও বিজেপির দিকেই আঙুল তোলেন। এ বার দিল্লি নেমে অভিষেক স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, পারলে তাঁকে আটকে দেখানো হোক। তৃণমূল যে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পালন করবেই, তা-ও বুঝিয়ে দিলেন তিনি।
অভিষেক ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’-র যে অভিযোগ তুলেছেন, রবিবার তার পক্ষে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন নতুন ‘অস্ত্র’-ও। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে শনিবার বাড়ির দেওয়াল ভেঙে একই পরিবারের তিন শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। রবিবার সকালে জানা গেল, বাঁকুড়ারই ছাতনায় একই ভাবে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। দু’টি পরিবারের কেউই কেন্দ্রের আবাস যোজনার টাকা পাননি। এটাই সামনে এনে অভিষেক তথা তৃণমূলের দাবি, মৃত চারজনই ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র সাম্প্রতিকতম শিকার। অভিষেক বিমানে তাঁর সঙ্গী করে নিয়ে গিয়েছেন মৃতদের পরিজনদের। বিমানে ওঠার আগে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহকে। জানালেন, ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা, দু’টি প্রকল্পেই বাংলার পাওনা টাকা আটকে রয়েছে গিরিরাজের মন্ত্রকের হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy