Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Sandeshkhali Incident

সন্দেশখালির মেয়েদের গাত্রবর্ণ নিয়ে প্রশ্ন, বিতর্কে বিধায়ক

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মতে, ‘‘আদিবাসী বা মুসলিমদের এঁরা কি পোশাক দিয়ে চেনেন! আসলে বিজেপি আর তৃণমূল একই পাঠশালায় পড়েছে।’’

sandeshkhali

উত্তপ্ত সন্দেশখালি। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪৬
Share: Save:

সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ দুই তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন বহু স্থানীয় মহিলা। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছেও তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু ওই গ্রামবাসীদের পরিচয়, দৈহিক গঠন এবং গাত্রবর্ণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়ালেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি তথা অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। বিরোধীরা বিঁধতে ছাড়ছে না।

সন্দেশখালি এলাকাটি তফসিলি এবং আদিবাসী প্রধান। চেয়ারম্যান অরুণ হালদারের নেতৃত্বে জাতীয় তফসিলি কমিশনের একটি দল আজ, বৃহস্পতিবার সন্দেশখালিতে যাচ্ছে। তার আগে বুধবার নারায়ণ বলেন, ‘‘একটা তফসিলি-আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষকে তাঁদের দৈহিক গঠন এবং দেহের রং দিয়ে বোঝা যায়। মনে রাখবেন, শারীরিক গঠন এবং শরীরের যে রং, তথাকথিত আমরা যে বলি ফর্সা, শ্যামবর্ণ, এই দেখে কিন্তু বোঝা যায়। কিন্তু ক্যামেরার সামনে যে সব মহিলা এসেছেন, তাঁরা সব ধবধবে ফর্সা। তা হলে কি তাঁরা তফসিলি জনজাতি? আদিবাসী জনগোষ্ঠী?’’

নারায়ণের দাবি, ‘‘আমরা এটা দলগত ভাবে খোঁজখবর করছি। দরকার হলে পুলিশকেও দেব। যে মুখগুলি সামনে এসেছে, তাঁরা সিপিএমের মহিলা সংগঠনের সদস্য, আশাকর্মী, আইসিডিএস কর্মী। তাঁদের সামনে এনে একটা নাটক তৈরি করা হচ্ছে। যে বাচ্চাটাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখাচ্ছে, তাকে স্ক্রিপ্ট পড়িয়ে আনা হয়েছে। ওখানে জনসভা করার সুযোগ পেলে মানুষের সামনে এগুলি তুলে ধরব।’’

নারায়ণ এ-ও স্বীকার করেছেন, ‘‘ঘটনা ঘটেনি— সে কথা একবারও বলছি না। কিন্তু যা ঘটেছে, তাকে আরও বড় করে কিছু চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যের মাধ্যমে সারা বাংলায় কৃত্রিম অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে।’’ পরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নারায়ণ বলেন, ‘‘আমি বলতে চেয়েছি, সন্দেশখালিতে এক মহিলাকে রাজ্যপালের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল। তাঁকেই আবার সুকান্ত মজুমদারের ধর্না মঞ্চের কাছে দেখা গিয়েছে। তিনি বোরখা পরেছিলেন। আর এক মহিলা টিভিতে বসেছিলেন। ওই দুই মহিলাকে এলাকার মানুষ শনাক্ত করতে পারছেন না। সন্দেশখালির মহিলারা তো দূরের কথা, পুরুষেরাও হিন্দিতে কথা বলতে পারেন না। তা হলে ওই দুই মহিলা কি আদৌ সন্দেশখালির?’’

নারায়ণের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘জাতীয় তফসিলি জাতি ও জনজাতি কমিশনের কাছে আবেদন জানাব, এই ধরনের মন্তব্যের জন্য ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত। সন্দেশখালিতে কুকর্ম ধরা পড়ে গিয়েছে। তার পরে রুচিহীন কথা বলছেন।’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জনজাতি পরিবারে জন্ম হলে তাঁর গায়ের রং কালো হতে হবে? তাঁর কথায় জড়তা থাকতে হবে? কোনও আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে তাঁকে বঞ্চিত হতে হবে? এ কোন ভাবনা? আসলে তৃণমূল দল নারী-বিরোধী, জনজাতি-উপজাতি বিরোধী!’’

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মতে, ‘‘আদিবাসী বা মুসলিমদের এঁরা কি পোশাক দিয়ে চেনেন! আসলে বিজেপি আর তৃণমূল একই পাঠশালায় পড়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sandeshkhali Incident sandeshkhali TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE