আলোরানি সরকারের বাড়ির সামনে র্যাফের টহল। রবিবার কাঁচরাপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
দলের নেতারা কেন বাড়িতে বসে বৈঠক করে গেলেন, সেই রাগে তৃণমূল নেত্রীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির লোকজনের বিরুদ্ধে।
শনিবার দুপুরে আলোরানি সরকার নামে কাঁচরাপাড়ার ওই তৃণমূল নেত্রীর বাড়িতে এসেছিলেন দলের নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসু, মদন মিত্র, পার্থ ভৌমিকেরা। বৈঠক চলাকালীনও সেখানে জড়ো হয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। কাঁচরাপাড়া স্টেশনে অবরোধও হয়।
উত্তেজনা কমেনি রাতেও। বীজপুর থানায় দায়ের করা অভিযোগে আলোরানি জানিয়েছেন, নেতা-মন্ত্রীরা বেরিয়ে যাওয়ার পরে রাত থেকে বিজেপির বাইক-বাহিনী বাড়ির সামনে টহল শুরু করে। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেয়। গালিগালাজ চলতে থাকে। তাঁর বাড়িতে কেন বাইরে থেকে নেতারা এলেন, তা নিয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হয়। আলোরানির অভিযোগ, বাড়িতে ফের বৈঠক হলে তাঁকে খুন করা হবে হুমকি দিয়ে গিয়েছে বিজেপির লোকজন।
কাঁচরাপাড়া স্টেশনের কাছে গাঁধী মোড়ে একটি সরু গলি দিয়ে ঢুকে আলোরানির বিশাল বাড়ি। স্বামী-ছেলে চিকিৎসক। নিজে থাকেন গানবাজনা নিয়ে। তৃণমূলের বীজপুরের কার্যনির্বাহী সভাপতি হিসাবে পরিচিতি আছে আলোরানির। শনিবার রাতে তাঁর অভিযোগ পাওয়ার পরে বাড়ির সামনে র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে বলে ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রের খবর। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
আলোরানির কথায়, ‘‘পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়ার পর থেকে ওরা আর আসেনি। তবে ভয়ে ভয়ে আছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মুকুল রায় ও তাঁর ছেলে শুভ্রাংশুই এ সব করাচ্ছেন। আমি সব কথা দলের উপর মহলে জানিয়েছি।’’
নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের দাবি, ‘‘বৈঠকের পর থেকেই ওরা আমাদের ওই নেত্রীকে হুমকি দিচ্ছিল। আমাদের দলের কার্যালয়ও দখল করছে বিজেপি। মানুষ ওদের কাণ্ড-কারখানা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না।’’
মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু অবশ্য হুমকির অভিযোগ মানেননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো সারা বীজপুর সিসি ক্যামেরায় মুড়ে দিয়েছি। ওই মহিলার বাড়িতেও তো সিসি ক্যামেরা আছে বলে শুনলাম। পুলিশ দেখুক, কেউ কিছু করেছে কিনা।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আর কত কিছু বানিয়ে বলবে ওরা!’’
এ দিকে, রবিবার বিকেলে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের নেতৃত্বে আমডাঙা ও দত্তপুকুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। লোকসভা ভোটের পর থেকে এলাকা বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্ষে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে। তাঁদের দলের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার প্রতিবাদেই এ দিন থানা ঘেরাও কর্মসূচি বলে জানিয়েছে বিজেপি। অর্জুন বলেন, ‘‘আমডাঙা-দত্তপুকুরে তৃণমূলের লোকজন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি ঢুকে হামলা করছে। এরপরে এই এলাকা যদি নন্দীগ্রাম হয়ে ওঠে, তা হলে দায়ী থাকবে তৃণমূলই।’’
এ দিন নৈহাটি, হালিশহরে দলের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয়। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির লোকজন হুমকি দিয়ে, সন্ত্রাস করে এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে। আমাদের পার্টি অফিসও দখল করছে।’’
তাঁর অভিযোগ, বীজপুরে তাঁদের দলীয় কার্যালয়টি বিজেপি দখল করে নেয় ভোটের ফল প্রকাশের পরে। অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। তারপর থেকে অফিসটি তালা দিয়ে রেখেছে পুলিশ। সে কারণেই শনিবার দলের এক নেত্রীর বাড়িতে বৈঠক হয়েছে। পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ অবশ্য মানেননি অর্জুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy